প্রশ্ন-
রাজা অষ্টম হেনরীর রাজত্বকালে ১৫৩১ খৃষ্টাব্দে ধর্মকে মানুষের ব্যক্তিগত জীবনে সীমাবদ্ধ করা হয় আর রাষ্ট্রীয় নিয়মনীতি মানুষের হাতে আনা হয়। এভাবে সার্বভৌম ক্ষমতা আল্লাহ্’র অধিকার মানুষ নিয়ে নেয়। তখন থেকেই দাজ্জালের জন্ম হয়।
উত্তরঃ
আপনার ব্যাখ্যাটি ঠিক নয়। কারণ, দাজ্জালের জন্ম ১৫৩৭ খৃষ্টাব্দে হয়নি। বরং রসূলুল্লাহ্ (সা:) এর সময়কাল থেকেই দাজ্জাল ছিল। এ বিষয়টি বুঝতে নিুোক্ত হাদিসটি গভীরভাবে লক্ষ্য করুন-
ফাতিমা বিনতু কাইস (রা.) হতে বর্ণিত আছে, “রসূলুল্লাহ্ (সা:) কোন এক সময় মিম্বারে উঠে হাসতে-হাসতে বললেন ঃ আমাকে তামীম আদ-দারী একটি খবর শুনিয়েছে। আমি তাতে সন্তুষ্ট হয়েছি এবং আমি তোমাদেরকেও তা শুনাতে পছন্দ করি। কোন একদিন ফিলিস্তিনের কয়েকজন লোক নৌযানে চড়ে সমুদ্র বিহারে যাতায়াত করেছিল। হঠাৎ সমুদ্রের উত্তাল তরঙ্গে তারা দিকভ্রান্ত হয়ে পড়ে এবং এক অচেনা দ্বীপে এসে পড়ে। তারা সে জায়গাতে এক বিচিত্র ধরণের প্রাণীর সন্ধান পায়, যার চুলগুলো ছিল চারদিকে ছড়ানো। তারা প্রশ্ন করল, তুমি কে? সে উত্তর দিল, আমি জাস্সাসা (অনুসন্ধানকারী)। তারা বলল, তুমি আমাদেরকে কিছু অনুসন্ধান দাও। সে বলল, আমি তোমাদেরকে কিছু বলবও না এবং তোমাদের নিকট কিছু জানতেও চাইব না, বরং তোমরা এ জনপদের শেষ সীমানায় যাও। সে স্থানে এমন একজন লোক আছে সে তোমাদেরকে কিছু বলবে এবং তোমাদের নিকট কিছু জানার ইচ্ছা করবে। তারপর আমরা গ্রামের শেষ সীমানায় পৌঁছে দেখতে পেলাম একটি লোক শিকলে বাঁধা আছে। সে আমাদের বলল, তোমরা (সিরিয়ার) ‘যুগার’ নামক স্থানের ঝর্ণার খবর বল। আমরা বললাম, তা পানিপূর্ণ এবং এখনো সবেগে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। সে বলল, ‘বুহাইরা’ (তাবারিয়া উপসাগর)-এর কি সংবাদ, তা আমাকে বল। আমরা বললাম, তাও পানিপূর্ণ এবং তা হতে সবেগে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। সে আবার বলল, জর্দান ও ফিলিস্তিনের মধ্যবর্তী জায়গায় অবস্থিত ‘বাইসান’ নামক খেঁজুর বাগানের খবর বল। তাতে কি ফল উৎপন্ন হয়? আমরা বললাম, হ্যাঁ। সে আবার প্রশ্ন করল, নাবী প্রসঙ্গে বল, তিনি কি প্রেরিত হয়েছেন? আমরা বললাম, হ্যাঁ। সে বলল, তাঁর নিকট জনগণ ভিড়ছে কেমন? আমরা বললাম, খুবই দ্রুত। বর্ণনাকারী বলেন, একথা শুনে সে এমন এক লাফ দিল যে, শেকল প্রায় ছিন্ন করে ফেলেছিল। আমরা তাকে প্রশ্ন করলাম, তুমি কে? সে বলল, আমিই দাজ্জাল। সে ‘তাইবা’ ব্যতীত সমস্ত শহরেই প্রবেশ করবে। ‘তাইবা’ হলো মাদীনা।”
-মুসলিম, অধ্যায় ঃ ৫৪, বিভিন্ন ফিতনাহ্ ও ক্বিয়ামাতের লক্ষণসমূহ, অনুচ্ছেদ ঃ ২৪, জাস্সাসাহ্’র ঘটনা, হাদিস # ১১৯/২৯৪২, আবু দাউদ, স্বহীহ্, অধ্যায় ঃ ৩২, যুদ্ধ-সংঘর্ষ, অনুচ্ছেদ ঃ ১৫, জাস্সাসাহ্’র খবর, হাদিস # ৪৩২৬, তিরমিযী, স্বহীহ, অধ্যায় ঃ ৩১, কিতাবুন ফিতনাহ্, অনুচ্ছেদ ঃ ৬৬, হাদিস # ২২৫৩ (হাদিসটি তিরমিযীর বর্ণনা)।
অতএব , এই হাদিস থেকে বুঝা যায়, দাজ্জালের জন্ম ১৫৩৭ খৃষ্টাব্দে হয়নি, বরং সে রসূলুল্লাহ্ (সা:) এর সময়কাল থেকেই ছিল।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
দাজ্জালের ফিতনা ও ঈমানের হেফাজত
অন্ধকার ফিতনার ভয়ানক প্রতিচ্ছবি দিন দিন মানবতাকে গ্রাস করে চলেছে। ঈমানওয়ালাদের জন্য এটি কঠিন পরীক্ষার মুহূর্ত। কুফরের পক্ষ থেকে এদিক বা ওদিক...
-
আর্টিকেল ইনডেক্স – দাজ্জালের আলোচনাঃ উম্মতের জন্য একটি অতিশয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় দাজ্জালঃ ইহুদী ও খ্রিষ্টানদের দৃষ্টিভঙ্গি দাজ্জালের ফ...
-
কাফেররা মুসলমানদেরকে যে দৃষ্টিভঙ্গির দিকেই নিতে চায়, সারা বিশ্ব ওদিকেই দৌড়ে যেতে শুরু করে। সমাজের শিক্ষিত ব্যক্তিবর্গ কোন প্রকার লাভ লোকসান ...
-
হযরত ইমরান ইবনে হুসাইন হযরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন,“আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি,...
No comments:
Post a Comment