Monday, 29 April 2019

ইনশাআল্লাহ খুব শীগ্রই ইমাম মাহদী আগমন ঘটবে

ইনশাআল্লাহ খুব শীগ্রই ইমাম মাহদী আগমন ঘটবে...
_________________________
صدقة بن خالد عن عبد الرحمن بن حميد عن مجاهد عن تبيع قال سيعوذ بمكة عائذ
فيقتل ثم يمكث الناس برهة من دهرهم ثم يعوذ آخر فإن أدركته فلا تغزونه فإنه جيش
الخسف.


হযরত তাবে’ হতে বর্ণিত যে, তিনি বলেন আশ্রয়প্রাথী আচিরেই মক্কার নিকট আশ্রয় চাইবে। কিন্তু তাকে হত্যা করে দেওয়া হবে। অতপর মানুষ তাদের যুগের কিছু কাল বসবাস করবে। অতপর আরেকজন আশ্রয় চাইবে। যদি তুমি তাকে পাও তাহলে তোমরা তাকে আক্রমন করিও না। কেননা সে ধসনেওয়ালা সৈন্যদলের একজন সৈন্য। (অর্থাৎ যে আত্রুমন করতে যাবে তাকে মাটির নিচে ধসিয়ে দেওয়া হবে)  (আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ৯৩৫)

___________________


আশ্রয়প্রাথী আচিরেই মক্কার নিকট আশ্রয় চাইবে। কিন্তু তাকে হত্যা করে দেওয়া হবে! এই আলামত ১৯৭৯ সালে সংগঠিত হয়ে গেছে! জুহাইমান আল-ওতোয়বী নামক একব্যক্তি মসজিদ আল-হারাম অবরোধ করেছিল এবং তাকে সহ তার অনুসারীদেরকেও মৃত্যুদন্ডও দেওয়া হয়েছিল। যা হাদিসের সাথে শতভাগ মিল।

এরপরে যিনি আসবেন তিনিই হবেন প্রকৃত ইমাম মাহদী ইনশাআল্লাহ।

হাদিসে বর্ণিত دهر শব্দের অর্থ মহাকাল/সময়/যুগ ইত্যাদি তবে এ দ্বারা নিদিষ্ট কত বছর বুঝানো হয়েছে আল্লাহ তায়ালা ভাল জানেন। সময় যে একেবারেই সন্নিকটে তা বলার উপেক্ষা রাখেনা।

নিচে লিঙ্ক বিস্তারিত দেওয়া হলো ____
_________________________
https://www.bbc.com/bengali/amp/news-42124824

https://bn.m.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AE%E0%A6%B8%E0%A6%9C%E0%A6%BF%E0%A6%A6_%E0%A6%86%E0%A6%B2-%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%AE_%E0%A6%85%E0%A6%AC%E0%A6%B0%E0%A7%8B%E0%A6%A7

Thursday, 25 April 2019

ইহুদি খ্রিষ্টান যান্ত্রিক সভ্যতাই কি দাজ্জাল ? হিজবুত তাওহিদের সৃষ্ট ভ্রান্ত ধারনার অপনোদন

ইয়াহুদি-খৃষ্টান যান্ত্রিক সভ্যতাই দাজ্জাল
এই ব্যাখ্যায় যারা বিশ্বাসী তাদের
কাছে আমাদের প্রশ্ন
প্রশ্ন (১) ঃ “রসূলুল্লাহ্ (সা:) বলেছেন, দাজ্জাল ইরাক ও সিরিয়ার মধ্যবর্তী অঞ্চল থেকে বের হবে সে অঞ্চলকে বলা হয় খোরাসান।” -মুসলিম, অধ্যায় ঃ বিভিন্ন ফিতনাহ্ ও ক্বিয়ামাতের লক্ষণ সমূহ, অনুচ্ছেদ ঃ ২০, দাজ্জাল এবং তার বর্ণনা, তার পরিচয় এবং তার সাথে যা থাকবে, হাদিস # ১১০/২৯৩৭, তিরমিযী, স্বহীহ, অধ্যায় ঃ ৩১, কলহ ও বিপর্যয়, অনুচ্ছেদ ঃ ৫৭, কোন স্থান দাজ্জালের আগমণ ঘটবে? হাদিস # ২২৩৭, অনুচ্ছেদ ঃ ৫৯, হাদিস # ২২৪০, ইবনু মাজাহ্, স্বহীহ, অধ্যায় ঃ ৩৬, কিতাবুল ফিতনাহ্, অনুচ্ছেদ ঃ ৩৩, দাজ্জালের ফিতনাহ্ এবং ঈসা ইবনু মারইয়াম ও ইয়া’জুজ-মা’জুজ বের হওয়া, হাদিস # ৪০৭২, ৪০৭৫।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, ইয়াহুদি-খৃষ্টান যান্ত্রিক সভ্যতা কি খোরাসান থেকে আবির্ভূত হয়েছে? নিশ্চয়ই না। যেমন- উড়োজাহাজ (এ্যারোপ্লেন), রকেট, কম্পিউটার, টেলিফোন, মোবাইল ইত্যাদি। যদি এসব যান্ত্রিকতা খোরাসান থেকে আবিষ্কার বা আবির্ভূত না হয় তাহলে ইয়াহুদি-খৃষ্টান যান্ত্রিক সভ্যতা কিভাবে দাজ্জাল হল?
প্রশ্ন (২) ঃ “রসূলুল্লাহ্ (সা:) বলেছেন, আমি একবার স্বপ্নে দেখলাম... এসময় একজন লাল রংয়ের মোটা-সোটা কুঁকড়ানো চুলওয়ালা, ডান চোখ কানা এক ব্যক্তিকে দেখলাম তার (কানা) চোখটি যেন ভাসমান আঙ্গুর। আমি জিজ্ঞেস করলাম এই ব্যক্তি কে? তারা বলল, এই হচ্ছে দাজ্জাল...” -বুখারী, অধ্যায় ঃ ৯১, স্বপ্নের ব্যাখ্যা করা, অনুচ্ছেদ ঃ ৩৩, স্বপ্নে কা’বাগৃহ তাওয়াফ করা, হাদিস # ৭০২৬, অধ্যায় ঃ ৯২, ফিতনাহ্, অনুচ্ছেদ ঃ ২৬, দাজ্জাল সম্পর্কিত আলোচনা, হাদিস # ৭১২৮।
এখন আমাদের প্রশ্ন হচ্ছে, ইয়াহুদি-খৃষ্টান যান্ত্রিক সভ্যতার গায়ের রং কি শুধু লাল এবং তাদের চুল কি সব কোঁকড়ানো? নিশ্চয়ই না। যেমন- উড়োজাহাজ (এ্যারোপ্লেন), রকেট, কম্পিউটার, টেলিফোন, মোবাইল ইত্যাদি। এসব যন্ত্রপাতির কি চুল আছে? এসব যন্ত্রপাতির গায়ের রং কি শুধুই লাল? তাহলে আপনারা কিভাবে বলছেন ইয়াহুদি-খৃষ্টান যান্ত্রিক সভ্যতা দাজ্জাল?

প্রশ্ন (৩) ঃ “রসূলুল্লাহ্ (সা:) বলেছেন, দাজ্জাল পৃথিবীতে চল্লিশ দিন অবস্থান করবে এবং দিন-রাত্রি দীর্ঘায়িত হবে। এমন দীর্ঘায়িত যে, প্রথম দিন অতিবাহিত হতে এক বছর সময় লাগবে, দ্বিতীয় দিন অতিবাহিত হতে এক মাস সময় লাগবে, তৃতীয় দিন অতিবাহিত হতে এক সপ্তাহ লাগবে। আর বাকী দিনগুলি অতিবাহিত হবে স্বাভাবিক ভাবে।” -মুসলিম, অধ্যায় ঃ ৫৪, বিভিন্ন ফিতনাহ্ ও ক্বিয়ামাতের লক্ষণসমূহ, অনুচ্ছেদ ঃ ২০, দাজ্জালের বর্ণনা, তার পরিচয় এবং তার সাথে যা থাকবে, হাদিস # ১১০/২৯৩৭, আবু দাউদ, স্বহীহ, অধ্যায় ঃ ৩২, যুদ্ধ-সংঘর্ষ, অনুচ্ছেদ ঃ ১৩, ফোরাতের খনিজ সম্পদ উন্মুক্ত হওয়া সম্পর্কে, হাদিস # ৪৩২১, তিরমিযী, স্বহীহ, অধ্যায় ঃ ৩১, কলহ ও বিপর্যয়, অনুচ্ছেদ ঃ ৫৯, হাদিস # ২২৪০, ইবনু মাজাহ্, স্বহীহ, অধ্যায় ঃ ৩৫, কিতাবুল ফিতনাহ্, অনুচ্ছেদ ঃ ৩৩, দাজ্জালের ফিতনাহ্, ঈসা ইবনু মারইয়াম, ইয়াজুজ ও মাজুজ বের হওয়া, হাদিস # ৪০৭৫।
এখন আমাদের প্রশ্ন হচ্ছে, ইয়াহুদি-খৃষ্টান যান্ত্রিক সভ্যতা যদি দাজ্জাল হয় তবে তা কেন এখনও পৃথিবীতে অবস্থান করছে? ইয়াহুদি-খৃষ্টান যান্ত্রিক সভ্যতা যদি দাজ্জাল হয় তাহলেতো তার চল্লিশ দিনের বেশী অবস্থান করার কথা নয়।

প্রশ্ন (৪) ঃ “তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সা:) একবার দাজ্জাল সম্পর্কে আলোচনা করেন, ...(দাজ্জাল) পূর্ণ এক যুবক লোককে ডেকে তাকে তরবারীর আঘাতে দ্বিখণ্ডিত করে তীর নিক্ষেপের মত নিক্ষেপ করবে। তারপর, তাকে ডাক দিবে আর সে উজ্জল সহাস্য বদনে (অর্থাৎ হাসিমুখ অবস্থায়) তার দিকে ফিরে আসবে...।” -বুখারী, অধ্যায় ঃ ২৯, মাদীনার ফাযীলাত, অনুচ্ছেদ ঃ ৯, দাজ্জাল মাদীনায় প্রবেশ করতে পারবে না, হাদিস # ১৮৮২, অধ্যায় ঃ ৯২, ফিতনাহ্, অনুচ্ছেদ ঃ ২৭, দাজ্জাল মাদীনায় প্রবেশ করবে না, হাদিস # ৭১৩২, মুসলিম, অধ্যায় ঃ ৫৪, বিভিন্ন ফিতনাহ্ ও ক্বিয়ামাতের লক্ষণসমূহ, অনুচ্ছেদ ঃ ২০, দাজ্জালের বর্ণনা, তার পরিচয় এবং তার সাথে যা থাকবে, হাদিস # ১১০/২৯৩৭, অনুচ্ছেদ ঃ ২১, দাজ্জালের পরিচিত তার জন্য মাদিানা হারাম এবং কোন মু’মিনকে হত্যা ও জীবিতকরণ, হাদিস # ১১২,১১৩/২৯৩৮, তিরমিযী, স্বহীহ, অধ্যায় ঃ ৩১, কলহ ও বিপর্যয়, অনুচ্ছেদ ঃ ৫৯, দাজ্জালের ফিতনাহ্, হাদিস # ২২৪০ (হাদিসটি মুসলিমের বর্ণনা)।
এখন আমাদের প্রশ্ন হচ্ছে, ইয়াহুদি-খৃষ্টান যান্ত্রিক সভ্যতার কি এই ক্ষমতা আছে যে, মানুষকে হত্যা করে আবার জীবিত করতে পারবে? নিশ্চয়ই না। তাহলে আপনার কিভাবে দাবী করছেন যে, ইয়াহুদি-খৃষ্টান যান্ত্রিক সভ্যতাই দাজ্জাল।
প্রশ্ন (৫) ঃ রসূলুল্লাহ্ (সা:) এর সময়কাল থেকেই দাজ্জাল পৃথিবীতে ছিল। কিন্তু সে (দাজ্জাল) বাঁধা অবস্থায় বন্দী ছিল এবং কিছু সংখ্যক লোক তাকে (দাজ্জাল) দেখেছেন এবং তার (দাজ্জাল) সাথে কথাও বলেছেন। -মুসলিম, অধ্যায় ঃ ৫৪, বিভিন্ন ফিরনাহ্ ও ক্বিয়ামাতের লক্ষণসমূহ, অনুচ্ছেদ ঃ ২৪, জাস্সাসাহ্’র ঘটনা, হাদিস # ১১৯/২৯৪২, আবু দাউদ, স্বহীহ্, অধ্যায় ঃ ৩২, যুদ্ধ-সংঘর্ষ, অনুচ্ছেদ ঃ ১৫, জাস্সাসাহ্’র খবর, হাদিস # ৪৩২৬, তিরমিযী, স্বহীহ, অধ্যায় ঃ ৩১, কিতাবুল ফিতনাহ্, অনুচ্ছেদ ঃ ৬৬, হাদিস # ২২৫৩।
এখন আমাদের প্রশ্ন হচ্ছে, ইয়াহুদি-খৃষ্টান যান্ত্রিক সভ্যতা যদি দাজ্জাল হয় তাহলে যান্ত্রিক সভ্যতাকে কি বেঁধে রাখা যায়? আর তার সাথে কি কথা বলা সম্ভব? নিশ্চয়ই না! তবে কিভাবে আপনারা দাবী করছেন, ইয়াহুদি-খৃষ্টান যান্ত্রিক সভ্যতাই দাজ্জাল?

প্রশ্ন (৬) ঃ “রসূলুল্লাহ্ (সা:) বলেছেন, দাজ্জাল মাক্কাহ্ ও মাদীনায় প্রবেশ করতে পারবে না।” -বুখারী, অধ্যায় ঃ ২৯, মাদীনার ফাযীলাত, অনুচ্ছেদ ঃ ৯, দাজ্জাল মাদীনায় প্রবেশ করতে পারবে না, হাদিস # ১৮৮১, মুসলিম, অধ্যায় ঃ ৫৪, বিভিন্ন ফিতনাহ্ ও ক্বিয়ামাতের লক্ষণসমূহ, অনুচ্ছেদ ঃ ২৪, জাস্সাসা জন্তুর ঘটনা, হাদিস # ১২৩/২৯৪৩।
এখন আমাদের প্রশ্ন হচ্ছে, ইয়াহুদি-খৃষ্টান যান্ত্রিক সভ্যতা যদি দাজ্জাল হয় তাহলে কি এই যান্ত্রিক সভ্যতা মাক্কাহ্ ও মাদীনায় প্রবেশ করেনি? অবশ্যই করেছে! যেমন- ইয়াহুদি-খৃষ্টান যান্ত্রিক সভ্যতার আবি®কৃত উড়োজাহাজ (এ্যারোপ্লেন) মাক্কাহ্ ও মাদীনার উপর দিয়েও উড়ে বেড়ায়। তবে কিভাবে আপনারা ইয়াহুদি-খৃষ্টান যান্ত্রিক সভ্যতাকে দাজ্জাল বলছেন?

প্রশ্ন (৭) ঃ “নাবী (সা:) বলেছেন, দাজ্জাল আসবে অতপর মাদীনার একপাশে অবতরণ করবে। (এই সময়) মাদীনা তিনবার কেঁপে উঠবে। তখন সকল কাফির ও মুনাফিক্ব বের হয়ে তার (দাজ্জাল) নিকট চলে আসবে।” -বুখারী, অধ্যায় ঃ ২৯, মাদীনার ফাযীলাত, অনুচ্ছেদ ঃ ৯, দাজ্জাল মাদীনায় প্রবেশ করতে পারবে না, হাদিস # ১৮৮১, অধ্যায় ঃ ৯২, ফিতনাহ্, অনুচ্ছেদ ঃ ২৬, দাজ্জাল সম্পর্কিত আলোচনা, হাদিস # ৭১২৪, মুসলিম, অধ্যায় ঃ ৫৪, বিভিন্ন ফিতনাহ্ ও ক্বিয়ামাতের লক্ষণসমূহ, অনুচ্ছেদ ঃ ২৪, জাস্সাসা জন্তুর ঘটনা, হাদিস # ১২৩/২৯৪৩, (হাদিসটি বুখারীর বর্ণনা)।
এখন আমাদের প্রশ্ন হচ্ছে, ইয়াহুদি-খৃষ্টান যান্ত্রিক সভ্যতা যদি দাজ্জাল হয় তাহলে মাদীনা কি তিনবার কেঁপে উঠেছে? আর মাদীনা থেকে কি সকল কাফিররা বের হয়ে গেছে আপনি নিশ্চয়তা দিচ্ছেন? যদি তা না হয়, তাহলে আপনারা কিভাবে বলছেন যে, ইয়াহুদি-খৃষ্টান যান্ত্রিক সভ্যতাই দাজ্জাল?
প্রশ্ন (৮) ঃ “আন-নাওয়াস বিন সাম’আন আল ক্বিলাবী (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা রসূলুল্লাহ্ (সা:) দাজ্জাল সম্পর্কে আলোচনা করলেন, তিনি (সা:) বলেন... অতঃপর ঈসা ইবনু মারইয়াম (আ.) দামেস্কের পূর্ব প্রান্তে একটি সাদা মিনারে অবতরণ করবেন এবং লূদ নামক স্থানের দ্বার প্রান্তে দাজ্জালকে নাগালে পাবেন এবং তাকে হত্যা করবেন।” -আবু দাউদ, স্বহীহ, অধ্যায় ঃ ৩২, যুদ্ধ-সংঘর্ষ, অনুচ্ছেদ ঃ ১৩, ফোরাতের খনিজ সম্পদ উন্মুক্ত হওয়া সম্পর্কে, হাদিস # ৪৩২১, তিরমিযী, স্বহীহ, অধ্যায় ঃ ৩১, কলহ ও বিপর্যয়, অনুচ্ছেদ ঃ ৬২, দাজ্জালকে ঈসা ইবনু মারইয়াম হত্যা করবেন, হাদিস # ২২৪৪ (আবু দাউদের বর্ণনা)।
এখন আমাদের প্রশ্ন হচ্ছে, ইয়াহুদি-খৃষ্টান যান্ত্রিক সভ্যতা যদি দাজ্জাল হয় তাহলে কি লূদ নামক স্থানে ইয়াহুদি-খৃষ্টান আবি®কৃত সকল যান্ত্রিক সভ্যতা এসে উপস্থিত হবে? কারণ, সকল ইয়াহুদি-খৃষ্টান যান্ত্রিক সভ্যতাকে যদি লূদ নামক স্থানে একত্রিত না হয় তাহলেতো যান্ত্রিক সভ্যতার দাজ্জাল কিছু মারা পড়বে এবং কিছু বাকী থাকবে। এখন আপনারাই চিন্তা করে দেখুন ইয়াহুদি-খৃষ্টান আবি®কৃত সকল যান্ত্রিক সভ্যতাকে কি লূদ নামক স্থানে একত্রিতকরণ সম্ভব? নিশ্চয়ই না! তাহলে ঈসা (আ.) কিভাবে দাজ্জালকে লূদ নামক  স্থানে হত্যা করবেন? এই কথা থেকেই কি প্রমাণিত হয় না যে, ইয়াহুদি-খৃষ্টান যান্ত্রিক সভ্যতাই দাজ্জাল নয়?

প্রশ্ন (৯) ঃ “আন-নাওয়াস বিন সাম’আন আল ক্বিলাবী (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা রসূলুল্লাহ্ (সা:) দাজ্জাল সম্পর্কে আলোচনা করলেন, তিনি (সা:) বলেন... অতঃপর ঈসা ইবনু মারইয়াম (আ.) দামেস্কের পূর্ব প্রান্তে একটি সাদা মিনারে অবতরণ করবেন এবং লূদ নামক স্থানের দ্বার প্রান্তে দাজ্জালকে নাগালে পাবেন এবং তাকে হত্যা করবেন।” -আবু দাউদ, স্বহীহ, অধ্যায় ঃ ৩২, যুদ্ধ-সংঘর্ষ, অনুচ্ছেদ ঃ ১৩, ফোরাতের খনিজ সম্পদ উন্মুক্ত হওয়া সম্পর্কে, হাদিস # ৪৩২১, তিরমিযী, স্বহীহ, অধ্যায় ঃ ৩১, কলহ ও বিপর্যয়, অনুচ্ছেদ ঃ ৬২, দাজ্জালকে ঈসা ইবনু মারইয়াম হত্যা করবেন, হাদিস # ২২৪৪ (আবু দাউদের বর্ণনা)।
এখন আমাদের প্রশ্ন হচ্ছে, ইয়াহুদি-খৃষ্টান যান্ত্রিক সভ্যতা যদি দাজ্জাল হয় তাহলে বুঝা যাচ্ছে, দাজ্জাল জড় বস্তু? কারণ সভ্যতার কোন প্রাণ থাকে না। তবে কেন রসূলুল্লাহ্ (দ) বলেছেন, দাজ্জালকে ঈসা (আ.) হত্যা করবেন? হত্যা তাকেই করা যায় যার প্রাণ আছে। আর যার প্রাণ নেই তাকে হত্যা করা যায় না বরং ধ্বংস করা যায়। দাজ্জাল যদি ইয়াহুদি-খৃষ্টান যান্ত্রিক সভ্যতাই হতো তবে,  বলতেন  ঈসা (আ.) দাজ্জালকে ধ্বংস করবেন। যেহেতু ঈসা (আ.) দাজ্জালকে হত্যা করবেন এই থেকেই কি বুঝা যায় না যে,  ইয়াহুদি-খৃষ্টান যান্ত্রিক সভ্যতা দাজ্জাল নয়? বরং দাজ্জাল একজন প্রাণী।

ইহুদি খ্রিষ্টান যান্ত্রিক সভ্যতায় সৃষ্ট উড়োজাহাজ ই কি দাজ্জাল ?

প্রশ্ন -

“আন-নাওয়াস ইবনুস সাম’আন (রা.) হতে বর্ণিত, ...আমরা আবার (রসূলুল্লাহ্ (সা:) কে) প্রশ্ন করলাম, দুনিয়াতে তার (দাজ্জালের) চলার গতি কত দ্রুত হবে? তিনি (সা:) বললেন, তার (দাজ্জালের) চলার গতি বায়ুতাড়িত মেঘের ন্যায় হবে।”

-মুসলিম, অধ্যায় ঃ ৫৪, বিভিন্ন ফিতনাহ্ ও ক্বিয়ামাতের লক্ষণসমূহ, অনুচ্ছেদ ঃ ২০, দাজ্জালের বর্ণনা, তার পরিচয় এবং তার সাথে যা থাকবে, হাদিস # ১১০/২৯৩৭, আবু দাউদ, স্বহীহ, অধ্যায় ঃ ৩২, যুদ্ধ-সংঘর্ষ, অনুচ্ছেদ ঃ ১৩, ফোরাতের খনিজ সম্পদ উন্মুক্ত হওয়া সম্পর্কে, হাদিস # ৪৩২১, তিরমিযী, স্বহীহ, অধ্যায় ঃ ৩১, কলহ ও বিপর্যয়, অনুচ্ছেদ ঃ ৫৯, হাদিস # ২২৪০, ইবনু মাজাহ্, স্বহীহ, অধ্যায় ঃ ৩৫, কিতাবুল ফিতনাহ্, অনুচ্ছেদ ঃ ৩৩, দাজ্জালের ফিতনাহ্, ঈসা ইবনু মারইয়াম, ইয়াজুজ ও মাজুজ বের হওয়া, হাদিস # ৪০৭৫, (হাদিসটি মুসলিমের বর্ণনা)।

এই হাদিসটি বলছে যে, দাজ্জাল বায়ুতাড়িত মেঘের ন্যায় আকাশে উড়ে বেড়াবে। দাজ্জাল যদি দৈত্য-দানবই হবে তাহলে তাকে মেঘের গতির সাথে তুলনা করার প্রয়োজন কি ছিল? মূলতঃ ইয়াহুদি খৃষ্টান যান্ত্রিক সভ্যতার সৃষ্টি উড়োজাহাজ (এ্যারোপ্লেন) যখন আকাশ দিয়ে উড়ে যায় তখন তাকে দেখতে মেঘের খণ্ডের মতই মনে হয়। এই থেকেই বুঝা যায় ইয়াহুদি খৃষ্টান যান্ত্রিক সভ্যতার সৃষ্টি উড়োজাহাজই (এ্যারোপ্লেন) দাজ্জাল।


উত্তর-

এই ব্যাখ্যাটি সম্পূর্ণ মনগড়া। আপনার বোধগম্যতার জন্য একটু বিস্তারিত বলছি।
“আনাস ইবনু মালিক (রা.) হতে বর্ণিত, নাবী (সা:) বলেছেন, মাক্কাহ্ ও মাদীনা ব্যতীত এমন কোন শহর নেই যেখানে দাজ্জাল প্রবেশ করবে না। মাক্কাহ এবং মাদীনার প্রতিটি প্রবেশ পথেই মালাইকাহ্গণ (ফেরেশতাগণ) সাঁরিবদ্ধভাবে পাহারায় নিযুক্ত থাকবেন...।” -বুখারী, অধ্যায় ঃ ২৯, মাদীনার ফাযীলাত, অনুচ্ছেদ ঃ ৯, দাজ্জাল মাদীনায় প্রবেশ করতে পারবে না, হাদিস # ১৮৮১, মুসলিম, অধ্যায় ঃ ৫৪, বিভিন্ন ফিতনাহ্ ও ক্বিয়ামাতের লক্ষণসমূহ, অনুচ্ছেদ ঃ ২৪, জাস্সাসা জন্তুর ঘটনা, হাদিস # ১২৩/২৯৪৩ (হাদিসটি বুখারীর বর্ণনা)।


এই হাদিসটি বলছে যে, দাজ্জাল মাক্কাহই-মাদীনায় প্রবেশ করতে পারবে না। দাজ্জাল যদি উড়োজাহাজই (এ্যারোপ্লেন) হবে তাহলে উড়োজাহাজ (এ্যারোপ্লেন) কি মাক্কাহ্ মাদীনায় প্রবেশ করেনি? নিশ্চয়ই করেছে! তাই বুঝতে হবে যে, উড়োজাহাজ (এ্যারোপ্লেন) যদি দাজ্জাল হত তাহলে তা মাক্কাহ্ মাদীনায় প্রবেশ করতে পারতো না। অতএব, ইয়াহুদি খৃষ্টান যান্ত্রিক সভ্যতার সৃষ্টি উড়োজাহাজ (এ্যারোপ্লেন) দাজ্জাল, এটি গ্রহণযোগ্য কথা নয়, তাই আপনার ব্যাখ্যাটি ভূল।

দাজ্জালের জন্ম নিয়ে সংশয়

প্রশ্ন-
রাজা অষ্টম হেনরীর রাজত্বকালে ১৫৩১ খৃষ্টাব্দে ধর্মকে মানুষের ব্যক্তিগত জীবনে সীমাবদ্ধ করা হয় আর রাষ্ট্রীয় নিয়মনীতি মানুষের হাতে আনা হয়। এভাবে সার্বভৌম ক্ষমতা আল্লাহ্’র অধিকার মানুষ নিয়ে নেয়। তখন থেকেই দাজ্জালের জন্ম হয়।

উত্তরঃ
আপনার ব্যাখ্যাটি ঠিক নয়। কারণ, দাজ্জালের জন্ম ১৫৩৭ খৃষ্টাব্দে হয়নি। বরং রসূলুল্লাহ্ (সা:) এর সময়কাল থেকেই দাজ্জাল ছিল। এ বিষয়টি বুঝতে নিুোক্ত হাদিসটি গভীরভাবে লক্ষ্য করুন-


ফাতিমা বিনতু কাইস (রা.) হতে বর্ণিত আছে, “রসূলুল্লাহ্ (সা:) কোন এক সময় মিম্বারে উঠে হাসতে-হাসতে বললেন ঃ আমাকে তামীম আদ-দারী একটি খবর শুনিয়েছে। আমি তাতে সন্তুষ্ট হয়েছি এবং আমি তোমাদেরকেও তা শুনাতে পছন্দ করি। কোন একদিন ফিলিস্তিনের কয়েকজন লোক নৌযানে চড়ে সমুদ্র বিহারে যাতায়াত করেছিল। হঠাৎ সমুদ্রের উত্তাল তরঙ্গে তারা দিকভ্রান্ত হয়ে পড়ে এবং এক অচেনা দ্বীপে এসে পড়ে। তারা সে জায়গাতে এক বিচিত্র ধরণের প্রাণীর সন্ধান পায়, যার চুলগুলো ছিল চারদিকে ছড়ানো। তারা প্রশ্ন করল, তুমি কে? সে উত্তর দিল, আমি জাস্সাসা (অনুসন্ধানকারী)। তারা বলল, তুমি আমাদেরকে কিছু অনুসন্ধান দাও। সে বলল, আমি তোমাদেরকে কিছু বলবও না এবং তোমাদের নিকট কিছু জানতেও চাইব না, বরং তোমরা এ জনপদের শেষ সীমানায় যাও। সে স্থানে এমন একজন লোক আছে সে তোমাদেরকে কিছু বলবে এবং তোমাদের নিকট কিছু জানার ইচ্ছা করবে। তারপর আমরা গ্রামের শেষ সীমানায় পৌঁছে দেখতে পেলাম একটি লোক শিকলে বাঁধা আছে। সে আমাদের বলল, তোমরা (সিরিয়ার) ‘যুগার’ নামক স্থানের ঝর্ণার খবর বল। আমরা বললাম, তা পানিপূর্ণ এবং এখনো সবেগে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। সে বলল, ‘বুহাইরা’ (তাবারিয়া উপসাগর)-এর কি সংবাদ, তা আমাকে বল। আমরা বললাম, তাও পানিপূর্ণ এবং তা হতে সবেগে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। সে আবার বলল, জর্দান ও ফিলিস্তিনের মধ্যবর্তী জায়গায় অবস্থিত ‘বাইসান’ নামক খেঁজুর বাগানের খবর বল। তাতে কি ফল উৎপন্ন হয়? আমরা বললাম, হ্যাঁ। সে আবার প্রশ্ন করল, নাবী প্রসঙ্গে বল, তিনি কি প্রেরিত হয়েছেন? আমরা বললাম, হ্যাঁ। সে বলল, তাঁর নিকট জনগণ ভিড়ছে কেমন? আমরা বললাম, খুবই দ্রুত। বর্ণনাকারী বলেন, একথা শুনে সে এমন এক লাফ দিল যে, শেকল প্রায় ছিন্ন করে ফেলেছিল। আমরা তাকে প্রশ্ন করলাম, তুমি কে? সে বলল, আমিই দাজ্জাল। সে ‘তাইবা’ ব্যতীত সমস্ত শহরেই প্রবেশ করবে। ‘তাইবা’  হলো মাদীনা।”

-মুসলিম, অধ্যায় ঃ ৫৪, বিভিন্ন ফিতনাহ্ ও ক্বিয়ামাতের লক্ষণসমূহ, অনুচ্ছেদ ঃ ২৪, জাস্সাসাহ্’র ঘটনা, হাদিস # ১১৯/২৯৪২, আবু দাউদ, স্বহীহ্, অধ্যায় ঃ ৩২, যুদ্ধ-সংঘর্ষ, অনুচ্ছেদ ঃ ১৫, জাস্সাসাহ্’র খবর, হাদিস # ৪৩২৬, তিরমিযী, স্বহীহ, অধ্যায় ঃ ৩১, কিতাবুন ফিতনাহ্, অনুচ্ছেদ ঃ ৬৬, হাদিস # ২২৫৩ (হাদিসটি তিরমিযীর বর্ণনা)।



অতএব , এই হাদিস থেকে বুঝা যায়, দাজ্জালের জন্ম ১৫৩৭ খৃষ্টাব্দে হয়নি, বরং সে রসূলুল্লাহ্ (সা:) এর সময়কাল থেকেই ছিল।

দাজ্জাল কে যে স্থানে হত্যা করা হবে ?

ঈসা ইবনে মারইয়াম (আ.) দাজ্জালকে হত্যা করবেন এবং
সে স্থানটির নাম হচ্ছে লূদ-

“আন-নাওয়াস বিন সাম’আন আল ক্বিলাবী (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা রসূলুল্লাহ্ (সা:) দাজ্জাল সম্পর্কে আলোচনা করলেন, তিনি (সা:) বলেন... অতঃপর ঈসা ইবনু মারইয়াম (আ.) দামেশ্কের পূর্ব প্রান্তে একটি সাদা মিনারে অবতরণ করবেন এবং লূদ নামক স্থানের দ্বার প্রান্তে দাজ্জালকে নাগালে পাবেন এবং তাকে হত্যা করবেন।”

-আবু দাউদ, স্বহীহ, অধ্যায় ঃ ৩২, যুদ্ধ-সংঘর্ষ, অনুচ্ছেদঃ ১৩, ফোরাতের খনিজ সম্পদ উন্মুক্ত হওয়া সম্পর্কে, হাদিস # ৪৩২১,
তিরমিযী, স্বহীহ, অধ্যায় ঃ ৩১, কলহ ও বিপর্যয়, অনুচ্ছেদ ঃ ৬২, দাজ্জালকে ঈসা ইবনু মারইয়াম হত্যা করবেন, হাদিস # ২২৪৪ (আবু দাউদের বর্ণনা)।

দাজ্জালের ফিতনাহ থেকে মুক্তি ও সূরা কাহাফ

যে ব্যক্তি সূরা কাহ্ফের প্রথম ১০ আয়াত মুখস্ত করবে-

সে দাজ্জালের ফিতনাহ্ হতে মুক্তি পাবে
“আবু দারদা (রা) হতে বর্ণিত, নাবী (সা:) বলেছেন, যে ব্যক্তি সূরা কাহ্ফের প্রথম ১০ আয়াত মুখস্ত করবে সে দাজ্জালের ফিৎনাহ্ হতে মুক্তি পাবে।”


-আবু দাউদ, স্বহীহ, অধ্যায়ঃ ৩২, যুদ্ধ-সংঘর্ষ, অনুচ্ছেদঃ১৩, ফোরাতের খনিজ সম্পদ উন্মুক্ত হওয়া সম্পর্কে, হাদিস # ৪৩২৩।

দাজ্জাল পৃথিবীতে আবির্ভূত হওয়ার সময়কালে মাক্কাহ্ ও মাদীনার অবস্থা

দাজ্জাল পৃথিবীতে আবির্ভূত হওয়ার সময়কালে মাক্কাহ্ ও মাদীনার অবস্থা-

(ক)
দাজ্জাল মাক্কাহ্ ও মাদীনায় প্রবেশ করতে পারবে না কারণ মাক্কাহ্ ও মাদীনার প্রবেশ পথেই মালাইকাহ্গণ (ফেরেশতা) পাহারায় নিযুক্ত থাকবেনঃ


“আনাস ইবনু মালিক (রা.) হতে বর্ণিত, নাবী (সা:) বলেছেন, মাক্কাহ্ ও মাদীনা ব্যতীত এমন কোন শহর নেই যেখানে দাজ্জাল প্রবেশ করবে না। মাক্কাহ এবং মাদীনার প্রতিটি প্রবেশ পথেই মালাইকাহ্গণ (ফেরেশতাগণ) সাঁরিবদ্ধভাবে পাহারায় নিযুক্ত থাকবেন...।”

-বুখারী, অধ্যায় ঃ ২৯, মাদীনার ফাযীলাত, অনুচ্ছেদ ঃ ৯, দাজ্জাল মাদীনায় প্রবেশ করতে পারবে না, হাদিস # ১৮৮১, মুসলিম, অধ্যায় ঃ ৫৪, বিভিন্ন ফিতনাহ্ ও ক্বিয়ামাতের লক্ষণসমূহ, অনুচ্ছেদ ঃ ২৪, জাস্সাসা জন্তুর ঘটনা, হাদিস # ১২৩/২৯৪৩ (হাদিসটি বুখারীর বর্ণনা)।


(খ) দাজ্জালের সময় মাদীনায় ৭টি প্রবেশ পথ থাকবে। প্রতিটি প্রবেশ পথে দু’জন করে মালাইকাহ্ (ফেরেশতা) নিযুক্ত থাকবেনঃ


“আবু বাকার (রা.) রসূলুল্লাহ্ (সা:) থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি (সা:) বলেছেন, মাদীনায় মাসীহ্ দাজ্জালের প্রভাব পড়বে না। সে সময় মাদীনায় ৭টি প্রবেশদ্বার থাকবে। প্রতিটি প্রবেশদ্বারে দু’জন করে ফেরেশতা নিযুক্ত থাকবেন।”

-বুখারী, অধ্যায়ঃ ২৯, মাদীনার ফাযীলাত, অনুচ্ছেদ ঃ ৯, দাজ্জাল মাদীনায় প্রবেশ করতে পারবে না, হাদিস # ১৮৭৯, অধ্যায়ঃ৯২, ফিতনাহ্, অনুচ্ছেদ ঃ ২৬, দাজ্জাল সম্পর্কিত আলোচনা, হাদিস # ৭১২৫, ৭১২৬।



(গ) দাজ্জাল যখন আবির্ভূত হবে তখন মাদীনা শহরটি তিনবার কেঁপে উঠবে, যে কারণে মাদীনা শহর থেকে সমস্ত কাফির ও মুনাফিক্ব বাহিরে বেরিয়ে আসবেঃ


“আনাস ইবনু মালিক (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নাবী (সা:) বলেছেন,

দাজ্জাল আসবে অতপর মাদীনার একপাশে অবতরণ করবে। (এই সময়) মাদীনা তিনবার কেঁপে উঠবে। তখন সকল কাফির ও মুনাফিক্ব বের হয়ে তার (দাজ্জাল) নিকট চলে আসবে।”

-বুখারী, অধ্যায়ঃ ২৯, মাদীনার ফাযীলাত, অনুচ্ছেদ ঃ ৯, দাজ্জাল মাদীনায় প্রবেশ করতে পারবে না, হাদিস # ১৮৮১, অধ্যায়ঃ ৯২, ফিতনাহ্, অনুচ্ছেদ ঃ ২৬, দাজ্জাল সম্পর্কিত আলোচনা, হাদিস # ৭১২৪,
মুসলিম, অধ্যায়ঃ ৫৪, বিভিন্ন ফিতনাহ্ ও ক্বিয়ামাতের লক্ষণসমূহ, অনুচ্ছেদঃ২৪, জাস্সাসা জন্তুর ঘটনা, হাদিস # ১২৩/২৯৪৩, (হাদিসটি বুখারীর বর্ণনা)।

দাজ্জালের অনুসারী

আস্বাহান এলাকার ৭০ হাজার ইয়াহুদি
দাজ্জালের অনুসারী হবে এবং তাদের কাঁধে
তাইলেসী (কাল) চাদর থাকবে-

“আনাস বিন মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত, নিশ্চয়ই রাসূলুল্লাহ্ (সা:) বলেছেন, আস্বাহান (এলাকার) ৭০ হাজার ইয়াহুদি দাজ্জালের অনুসরণ করবে। তাদের কাঁধে থাকবে তাইলেসী (কাল) চাদর। "


-মুসলিম, অধ্যায়ঃ ৫৪, বিভিন্ন ফিতনাহ্ ও ক্বিয়ামাতের লক্ষণসমূহ, অনুচ্ছেদঃ ২৫,
দাজ্জাল বিষয়ে অবশিষ্ট হাদিস, হাদিস # ১২৪/২৯৪৪।

দাজ্জাল আবির্ভূত হওয়ার পর পৃথিবীতে যতদিন থাকবে


দাজ্জাল আবির্ভূত হওয়ার পর
পৃথিবীতে যতদিন থাকবে-

“আন-নাওয়াস বিন সাম’আন (রা.) হতে বর্ণিত ...আমরা প্রশ্ন করলাম, হে আল্লাহ্’র রসূল (সা:) সে (দাজ্জাল) পৃথিবীতে কতদিন অবস্থান করবে? রাসূলুল্লাহ্ (সা:) বলেন, (দাজ্জাল) ৪০ দিন পর্যন্ত (পৃথিবীতে থাকবে) আর তার প্রথম দিন ১ বছরের সমান দীর্ঘ হবে, দ্বিতীয় দিন হবে ১ মাসের সমান, তৃতীয় দিনটি হবে ১ সপ্তাহের সমান এবং বাকী দিনগুলি প্রায় তোমাদের দিনগুলির সমপরিমাণ হবে...।”


-মুসলিম, অধ্যায়ঃ৫৪, বিভিন্ন ফিতনাহ্ ও ক্বিয়ামাতের লক্ষণসমূহ, অনুচ্ছেদ ঃ ২০, দাজ্জালের বর্ণনা, তার পরিচয় এবং তার সাথে যা থাকবে, হাদিস # ১১০/২৯৩৭,

আবু দাউদ, স্বহীহ, অধ্যায় ঃ ৩২, যুদ্ধ-সংঘর্ষ, অনুচ্ছেদ ঃ ১৩, ফোরাতের খনিজ সম্পদ উন্মুক্ত হওয়া সম্পর্কে, হাদিস # ৪৩২১, তিরমিযী, স্বহীহ, অধ্যায় ঃ ৩১, কলহ ও বিপর্যয়, অনুচ্ছেদ ঃ ৫৯, হাদিস # ২২৪০,
ইবনু মাজাহ্, স্বহীহ, অধ্যায় ঃ ৩৫, কিতাবুল ফিতনাহ্, অনুচ্ছেদ ঃ ৩৩, দাজ্জালের ফিতনাহ্, ঈসা ইবনু মারইয়াম, ইয়াজুজ ও মাজুজ বের হওয়া, হাদিস # ৪০৭৫, (হাদিসটি মুসলিমের বর্ণনা)।

দাজ্জালের যেসব ক্ষমতা থাকবে -

দাজ্জালের যেসব ক্ষমতা থাকবে

(ক) দাজ্জালের চলার গতি তীব্র বায়ুতাড়িত মেঘের ন্যায় হবেঃ

“আন-নাওয়াস ইবনুস সাম’আন (রা.) হতে বর্ণিত, ...আমরা আবার (রসূলুল্লাহ্ (সা:) কে) প্রশ্ন করলাম, দুনিয়াতে তার (দাজ্জালের) চলার গতি কত দ্রুত হবে? তিনি (সা:) বললেন, তার (দাজ্জালের) চলার গতি বায়ুতাড়িত মেঘের ন্যায় হবে।”

-মুসলিম, অধ্যায় ঃ ৫২, বিভিন্ন ফিতনাহ্ ও ক্বিয়ামাতের লক্ষণসমূহ, অনুচ্ছেদ ঃ ২০, দাজ্জালের বর্ণনা, তার পরিচয় এবং তার সাথে যা থাকবে, হাদিস # ১১০/২৯৩৭, আবু দাউদ, স্বহীহ, অধ্যায় ঃ ৩২, যুদ্ধ-সংঘর্ষ, অনুচ্ছেদ ঃ ১৩, ফোরাতের খনিজ সম্পদ উন্মুক্ত হওয়া সম্পর্কে, হাদিস # ৪৩২১, তিরমিযী, স্বহীহ, অধ্যায় ঃ ৩১, কলহ ও বিপর্যয়, অনুচ্ছেদ ঃ ৫৯, হাদিস # ২২৪০, ইবনু মাজাহ্, স্বহীহ, অধ্যায় ঃ ৩৫, কিতাবুল ফিতনাহ্, অনুচ্ছেদ ঃ ৩৩, দাজ্জালের ফিতনাহ্, ঈসা ইবনু মারইয়াম, ইয়াজুজ ও মাজুজ বের হওয়া, হাদিস # ৪০৭৫, (হাদিসটি মুসলিমের বর্ণনা)।


(খ) দাজ্জালের আদেশে বৃষ্টি হবে এবং জমিন থেকে ফসল হবেঃ

“আন-নাওয়াস (রা.) হতে বর্ণিত, ...(রসূলুল্লাহ্ (সা:) বলেছেন) সে (দাজ্জাল) তখন আকাশকে বৃষ্টি বর্ষণের জন্য আদেশ করবে এবং সে অনুযায়ী আকাশ বৃষ্টি বর্ষণ করবে তারপর সে জমিনকে ফসল উৎপন্নের জন্য নির্দেশ দিবে এবং সে অনুযায়ী জমিন ফসল উৎপন্ন করবে। তারপর বিকেলে তাদের পশুগুলো পূর্বের চেয়ে উঁচু কুঁজ বিশিষ্ট, মাংসবহুল নিতম্ব বিশিষ্ট ও দুগ্ধপুষ্ট স্তন বিশিষ্ট হবে। তারপর সে নিু ভূমিতে গিয়ে বলবে, তোমার ভিতরের খনিজ ভাণ্ডার বের করে দাও। তারপর সেখান হতে ফিরে আসার সময় সেখানকার ধন-ভাণ্ডার তার অনুসরণ করবে। যেভাবে মৌমাছিরা রাণী মৌমাছির অনুসরণ করে।”

-মুসলিম, অধ্যায় ঃ ৫২, বিভিন্ন ফিতনাহ্ ও ক্বিয়ামাতের লক্ষণসমূহ, অনুচ্ছেদ ঃ ২০, দাজ্জালের বর্ণনা, তার পরিচয় এবং তার সাথে যা থাকবে, হাদিস # ১১০/২৯৩৭,
আবু দাউদ, স্বহীহ, অধ্যায় ঃ ৩২, যুদ্ধ-সংঘর্ষ, অনুচ্ছেদ ঃ ১৩, ফোরাতের খনিজ সম্পদ উন্মুক্ত হওয়া সম্পর্কে, হাদিস # ৪৩২১,
তিরমিযী, স্বহীহ, অধ্যায় ঃ ৩১, কলহ ও বিপর্যয়, অনুচ্ছেদ ঃ ৫৯, হাদিস # ২২৪০,
ইবনু মাজাহ্, স্বহীহ, অধ্যায় ঃ ৩৫,
কিতাবুল ফিতনাহ্, অনুচ্ছেদ ঃ ৩৩, দাজ্জালের ফিতনাহ্, ঈসা ইবনু মারইয়াম, ইয়াজুজ ও মাজুজ বের হওয়া, হাদিস # ৪০৭৫, (হাদিসটি মুসলিমের বর্ণনা)।

(গ) দাজ্জালের সাথে পানি এবং আগুন থাকবে। মূলতঃ তার আগুন হবে পানি আর পানি হবে আগুনঃ

“হুযাইফা (রা.) নাবী (সা:) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি দাজ্জাল সম্পর্কে বলেছেন, তার সঙ্গে পানি ও আগুন থাকবে। আসলে তার আগুন-ই হবে শীতল পানি আর পানি হবে আগুন। আবু মাসউদ (রা.) বর্ণনা করেন যে, আমিও এই হাদিসটি রসূলুল্লাহ্ (সা:) থেকে শুনেছি।”

-বুখারী, অধ্যায় ঃ ৬০, নাবীগণের হাদিসসমূহ, অনুচ্ছেদ ঃ ৫০, বানী ঈসরাইল সম্পর্কে যা বর্ণিত হয়েছে, হাদিস # ৩৪৫০, অধ্যায় ঃ ৯২, ফিতনাহ্, অনুচ্ছেদ ঃ ২৬, দাজ্জাল সম্পর্কিত আলোচনা, হাদিস # ৭১৩০,

মুসলিম, অধ্যায় ঃ ৫৪, বিভিন্ন ফিতনাহ্ ও ক্বিয়ামাতের লক্ষণসমূহ, অনুচ্ছেদ ঃ ২০, দাজ্জালের বর্ণনা, তার পরিচয় এবং তার সাথে যা থাকবে, হাদিস # ১০৭,১০৮/২৯৩৪, ১০৯/২৯৩৬, ১১০,১১১/২১৩৭, ৭২৫৭ (হাদিসটি বুখারীর বর্ণনা)।



(ঘ) দাজ্জালের সাথে জান্নাত এবং জাহান্নামের মত কিছু থাকবে। যেটিকে সে জান্নাত বলবে তা মূলত জাহান্নামঃ

“আবু হুরাইরাহ্ (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নাবী (সা:) বলেছেন... সে (দাজ্জাল) সাথে করে জান্নাত এবং জাহান্নামের মত করে কিছু নিয়ে আসবে। অতএব, সে (দাজ্জাল) যেটিকে বলবে যে, এটি জান্নাত প্রকৃতপক্ষে সেটি হবে জাহান্নাম...।”

-বুখারী, অধ্যায় ঃ ৬০ নাবীগণের হাদিসসমূহ, অনুচ্ছেদ ঃ ৩, মহান আল্লাহ্’র বাণী ঃ “আর আমি নূহকে তার জাতির নিকট প্রেরণ করেছিলাম” -সূরা হুদ (১১), ২৫, হাদিস # ৩৩৩৮, মুসলিম, অধ্যায় ঃ ৫৪, বিভিন্ন ফিতনাহ্ ও ক্বিয়ামাতের লক্ষণসমূহ, অনুচ্ছেদ ঃ ২০, দাজ্জালের বর্ণনা, তার পরিচয় এবং তার সাথে যা থাকবে, হাদিস # ১১০,১১১/২১৩৭ (হাদিসটি বুখারীর বর্ণনা)।



(ঙ) দাজ্জালের সাথে রুটি, গোশতের পর্বত ও পানির নদী থাকবেঃ

“মুগীরা ইবনু শু’বা (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নাবী (সা:) কে দাজ্জালের ব্যাপারে যত বেশি প্রশ্ন করতাম তত বেশি প্রশ্ন আর কেউ করেননি। তিনি (সা:) আমাকে বললেন, তার (দাজ্জাল) সম্পর্কে তোমার কি প্রশ্ন আছে? আমি বললাম, লোকেরা বলেন যে, তার (দাজ্জাল) সঙ্গে রুটি, গোশতের পর্বত ও পানির নদী থাকবে। তিনি (সা:) বললেন, (হ্যাঁ; তবে) আল্লাহ’র নিকট তা খুব সহজ।”
-বুখারী, অধ্যায় ঃ ৯২, ফিতনাহ্, অনুচ্ছেদ ঃ ২৬, দাজ্জাল সম্পর্কিত আলোচনা, হাদিস # ৭১২২,
মুসলিম, অধ্যায় ঃ ৫৪, বিভিন্ন ফিতনাহ্ ও ক্বিয়ামাতের লক্ষণসমূহ, অনুচ্ছেদ ঃ ২২, দাজ্জালের (অলৌকিকত্ব) আল্লাহ্’র নিকট অধিক সহজ, হাদিস # ১১৪,১১৫/২৯৩৯ (হাদিসটি মুসলিমের বর্ণনা)।


(চ) দাজ্জাল মাক্কাহ্ ও মাদিনা ছাড়া পৃথিবীর সকল শহরে যাবেঃ

“আনাস ইবনু মালিক (রা.) হতে বর্ণিত, রসূলুল্লাহ্ (সা:) বলেছেন, মাক্কাহ্ ও মাদিনা ছাড়া পৃথিবীর সকল শহরেই দাজ্জাল প্রবেশ করবে...”

-বুখারী, অধ্যায় ঃ ২৯, মাদিনার ফাযিলাত, অনুচ্ছেদ ঃ ৯, দাজ্জাল মাদিনায় প্রবেশ করতে পারবে না, হাদিস # ১৮৮১, মুসলিম, অধ্যায় ঃ ৫৪, বিভিন্ন ফিতনাহ্ ও ক্বিয়ামাতের লক্ষণসমূহ, অনুচ্ছেদ ঃ ২৪, জাস্সাসা জন্তুর ঘটনা, হাদিস # ১২৩/২৯৪৩ (হাদিসটি বুখারীর বর্ণনা)।


(ছ) দাজ্জাল মানুষ হত্যা করে আবার জীবিত করতে পারবেঃ

“আন-নাওয়াস বিন সাম’আন (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সা:) একবার দাজ্জাল সম্পর্কে আলোচনা করেন, ...(দাজ্জাল) পূর্ণ এক যুবক লোককে ডেকে তাকে তরবারীর আঘাতে দ্বিখণ্ডিত করে তীর নিক্ষেপের মত নিক্ষেপ করবে। তারপর, তাকে ডাক দিবে আর সে উজ্জল সহাস্য বদনে (অর্থাৎ সুস্থ্য অবস্থায়) তার দিকে ফিরে আসবে...।” 


-বুখারী, অধ্যায় ঃ ২৯, মাদীনার ফাযীলাত, অনুচ্ছেদ ঃ ৯, দাজ্জাল মাদীনায় প্রবেশ করতে পারবে না, হাদিস # ১৮৮২, অধ্যায় ঃ ৯২, ফিতনাহ্, অনুচ্ছেদ ঃ ২৭, দাজ্জাল মাদীনায় প্রবেশ করবে না, হাদিস # ৭১৩২,
মুসলিম, অধ্যায় ঃ ৫৪, বিভিন্ন ফিতনাহ্ ও ক্বিয়ামাতের লক্ষণসমূহ, অনুচ্ছেদ ঃ ২০, দাজ্জালের বর্ণনা, তার পরিচয় এবং তার সাথে যা থাকবে, হাদিস # ১১০/২৯৩৭, অনুচ্ছেদ ঃ ২১, দাজ্জালের পরিচিতি তার জন্য মাদিনা হারাম এবং কোন মু’মিনকে হত্যা ও জীবিতকরণ, হাদিস # ১১২,১১৩/২৯৩৮,
তিরমিযী, স্বহীহ, অধ্যায় ঃ ৩১, কলহ ও বিপর্যয়, অনুচ্ছেদ ঃ ৫৯, দাজ্জালের ফিতনাহ্, হাদিস # ২২৪০ (হাদিসটি মুসলিমের বর্ণনা)।

দাজ্জাল দেখতে যেমন হবে !

দাজ্জাল দেখতে যেমন হবে


(ক)
দাজ্জালের দেহ খুব মোটা, গায়ের রং লাল বর্ণ, চুলগুলি কুঁকড়ানো, ডান চোখ কানা এবং কানা চোখটি যেন ভেসে উঠা আঙ্গুরের মত হবে ঃ
“আব্দুল্লাহ্ ইবনে ওমার (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সা:) বলেছেন, আমি একবার স্বপ্নে দেখলাম... এসময় একজন লাল রংয়ের মোটা-সোটা কুঁকড়ানো চুলওয়ালা, ডান চোখ কানা ব্যক্তিটিকে দেখলাম তার (কানা) চোখটি যেন ভাসমান আঙ্গুর। আমি জিজ্ঞেস করলাম, এই ব্যক্তি কে? তারা বলল, এই হচ্ছে দাজ্জাল...”

-বুখারী, অধ্যায় ঃ ৯১, স্বপ্নের ব্যাখ্যা করা, অনুচ্ছেদ ঃ ৩৩, স্বপ্নে কা’বাগৃহ তাওয়াফ করা, হাদিস # ৭০২৬, অধ্যায় ঃ ৯২, ফিৎনাহ্, অনুচ্ছেদ ঃ ২৬, দাজ্জাল সম্পর্কিত আলোচনা, হাদিস # ৭১২৮।


(খ) দাজ্জালের কপালে “কাফ, ফা, র” অর্থাৎ কাফির লেখা থাকবে-


“আনাস (রা.) হতে বর্ণিত, নিশ্চয়ই নাবী (সা:) বলেছেন, দাজ্জালের দুই চোখের মাঝখানে কাফ, ফা, র, অর্থাৎ কপালে ‘কাফির’ শব্দটি লেখা থাকবে।”

-বুখারী, অধ্যায়ঃ ৯২, ফিৎনাহ্, অনুচ্ছেদ ঃ ২৬, দাজ্জাল সম্পর্কিত আলোচনা, হাদিস # ৭১৩১, অধ্যায় ঃ ৯৭,
কিতাবুত তাওহীদ, অনুচ্ছেদ ঃ ১৭, আল্লাহ্’র বাণী ঃ “যাতে তুমি আমার তত্ত্বাবধানে প্রতিপালিত হও” -সূরা ত্বাহা (২০), ৩৯, আল্লাহ্’র বাণী ঃ “যা চলত আমার সরাসরি তত্ত্বাবধানে” -সূরা ক্বমার (৫৪), ১৪, হাদিস # ৭৪০৮,
মুসলিম, অধ্যায় ঃ ৫২, বিভিন্ন ফিৎনাহ্ ও ক্বিয়ামাতের লক্ষণসমূহ, অনুচ্ছেদ ঃ ২০, দাজ্জালের বর্ণনা তার পরিচয় এবং তার সাথে যা থাকবে, হাদিস # ১০১,১০২,১০৩/২৯৩৩,
আবু দাউদ, স্বহীহ্, অধ্যায় ঃ ৩২, যুদ্ধ-সংঘর্ষ, অনুচ্ছেদ ঃ ১৩, ফোরাতের খনিজ সম্পদ উন্মুক্ত হওয়া সম্পর্কে, হাদিস # ৪৩১৬,
তিরমিযী, স্বহীহ, অধ্যায় ঃ ৩১, কিতাবুল ফিতনাহ্, অনুচ্ছেদ ঃ ৬২, দাজ্জালকে ঈসা ইবনু মারইয়াম (আ.) হত্যা করবেন, হাদিস # ২২৪৫ (হাদিসটি মুসলিমের বর্ণনা)।

(গ) দাজ্জাল একজন যুবক হবেঃ

“আন-নাওয়াস ইবনুস সাম’আন (রা.) হতে বর্ণিত, ...(তিনি (সা:) বলেছেন) নিশ্চয়ই সে (দাজ্জাল) একজন যুবক হবে...”

-মুসলিম, অধ্যায় ঃ ৫২, বিভিন্ন ফিতনাহ্ ও ক্বিয়ামাতের লক্ষণসমূহ, অনুচ্ছেদ ঃ ২০, দাজ্জালের বর্ণনা, তার পরিচয় এবং তার সাথে যা থাকবে, হাদিস # ১১০/২৯৩৭,
তিরমিযী, স্বহীহ, অধ্যায় ঃ ৩১, কলহ ও বিপর্যয়, অনুচ্ছেদ ঃ ৫৯, হাদিস # ২২৪০,
ইবনু মাজাহ্, স্বহীহ, অধ্যায় ঃ ৩৫, কিতাবুল ফিতনাহ্, অনুচ্ছেদ ঃ ৩৩, দাজ্জালের ফিতনাহ্, ঈসা ইবনু মারইয়াম, ইয়াজুজ ও মাজুজ বের হওয়া, হাদিস # ৪০৭৫, (হাদিসটি মুসলিমের বর্ণনা)।


দাজ্জাল যেখান থেকে বের হবে !

দাজ্জাল যেখান থেকে বের হবে

(ক) দাজ্জাল ইরাক ও শাম (সিরিয়ার) মধ্যবর্তী অঞ্চল হতে আবির্ভূত হবে ঃ


“আন-নাওআস্ (রা.) হতে বর্ণিত... (রসূলুল্লাহ্ দ.) বলেছেন, সে (দাজ্জাল) ইরাক ও শাম (সিরিয়ার) মধ্যবর্তী অঞ্চল হতে আবির্ভূত হবে...”


-মুসলিম, অধ্যায় ঃ ৫২, বিভিন্ন ফিতনাহ্ ও ক্বিয়ামাতের লক্ষণ সমূহ, অনুচ্ছেদ ঃ ২০, দাজ্জাল এবং তার বর্ণনা, তার পরিচয় এবং তার সাথে যা থাকবে, হাদিস # ১১০/২৯৩৭, তিরমিযী, স্বহীহ, অধ্যায় ঃ ৩১, কলহ ও বিপর্যয়, অনুচ্ছেদ ঃ ৫৯, হাদিস # ২২৪০, ইবনু মাজাহ্, স্বহীহ, অধ্যায় ঃ ৩৬, কিতাবুল ফিতনাহ্, অনুচ্ছেদ ঃ ৩৩, দাজ্জালের ফিতনাহ্ এবং ঈসা ইবনু মারইয়াম ও ইয়া’জুজ-মা’জুজ বের হওয়া, হাদিস # ৪০৭৫ (হাদিসটি মুসলিমের বর্ণনা)।


(খ) দাজ্জাল প্রাচ্যের একটি দেশ থেকে বের হবে যে দেশকে বলা হয় খোরাসান ঃ


“আবু বাকার (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সা:) আমাদের বলেছেন, প্রাচ্যের খোরাসান হতে দাজ্জালের আবির্ভাব ঘটবে...”



-তিরমিযী, স্বহীহ, অধ্যায়, ঃ ৩১,  কিতাবুল ফিতনাহ্, অনুচ্ছেদ ঃ ৫৭, কোন স্থানে দাজ্জালের আগমন ঘটবে? হাদিস # ২২৩৭, ইবনু মাজাহ্, স্বহীহ, অধ্যায় ঃ ৩৬, কিতাবুল ফিতনাহ্, অনুচ্ছেদ ঃ ৩৩, দাজ্জালের ফিতনাহ্ এবং ঈসা ইবনু মারইয়াম ও ইয়া’জুজ-মা’জুজ বের হওয়া, হাদিস # ৪০৭২ (হাদিসটি তিরমিযীর বর্ণনা)।

দাজ্জাল রসূলুল্লাহ্ (সা:) এর যুগ থেকেই পৃথিবীতে ছিল তবে সে বন্দী রয়েছে

দাজ্জাল রসূলুল্লাহ্ (সা:) এর যুগ থেকেই পৃথিবীতে
ছিল তবে সে বন্দী রয়েছে ঃ


“ফাতিমা বিনতু কাইস (রা.) হতে বর্ণিত আছে, রসূলুল্লাহ্ (সা:) কোন এক সময় মিম্বারে উঠে হাসতে-হাসতে বললেন ঃ আমাকে তামীম আদ-দারী একটি খবর শুনিয়েছে। আমি তাতে সন্তুষ্ট হয়েছি এবং আমি তোমাদেরকেও তা শুনাতে পছন্দ করি। কোন একদিন ফিলিস্তিনের কয়েকজন লোক নৌযানে চড়ে সমুদ্র বিহারে যাতায়াত করেছিল। হঠাৎ সমুদ্রের উত্তাল তরঙ্গে তারা দিকভ্রান্ত হয়ে পড়ে এবং এক অচেনা দ্বীপে এসে পড়ে। তারা সে জায়গাতে এক বিচিত্র ধরণের প্রাণীর সন্ধান পায়, যার চুলগুলো ছিল চারদিকে ছড়ানো। তারা প্রশ্ন করল, তুমি কে? সে উত্তর দিল, আমি জাস্সাসা (অনুসন্ধানকারী)।

তারা বলল, তুমি আমাদেরকে কিছু অনুসন্ধান দাও। সে বলল, আমি তোমাদেরকে কিছু বলবও না এবং তোমাদের নিকট কিছু জানতেও চাইব না, বরং তোমরা এ জনপদের শেষ সীমানায় যাও। সে স্থানে এমন একজন লোক আছে সে তোমাদেরকে কিছু বলবে এবং তোমাদের নিকট কিছু জানার ইচ্ছা করবে। তারপর আমরা গ্রামের শেষ সীমানায় পৌঁছে দেখতে পেলাম একটি লোক শিকলে বাঁধা আছে। সে আমাদের বলল, তোমরা (সিরিয়ার) ‘যুগার’ নামক স্থানের ঝর্ণার খবর বল। আমরা বললাম, তা পানিপূর্ণ এবং এখনো সবেগে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। সে বলল, ‘বুহাইরা’ (তাবারিয়া উপসাগর)-এর কি সংবাদ, তা আমাকে বল। আমরা বললাম, তাও পানিপূর্ণ এবং তা হতে সবেগে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। সে আবার বলল, জর্দান ও ফিলিস্তিনের মধ্যবর্তী জায়গায় অবস্থিত ‘বাইসান’ নামক খেঁজুর বাগানের খবর বল।

তাতে কি ফল উৎপন্ন হয়? আমরা বললাম, হ্যাঁ। সে আবার প্রশ্ন করল, নাবী প্রসঙ্গে বল, তিনি কি প্রেরিত হয়েছেন? আমরা বললাম, হ্যাঁ। সে বলল, তাঁর নিকট জনগণ ভিড়ছে কেমন? আমরা বললাম, খুবই দ্রুত। বর্ণনাকারী বলেন, একথা শুনে সে এমন এক লাফ দিল যে, শেকল প্রায় ছিন্ন করে ফেলেছিল। আমরা তাকে প্রশ্ন করলাম, তুমি কে? সে বলল, আমি দাজ্জাল। সে ‘তাইবা’ ব্যতীত সমস্ত শহরেই প্রবেশ করবে। ‘তাইবা’  হলো মাদীনা।”


-মুসলিম, অধ্যায় ঃ ৫৪, বিভিন্ন ফিতনাহ্ ও ক্বিয়ামাতের লক্ষণসমূহ, অনুচ্ছেদ ঃ ২৪, জাস্সাসাহ্’র ঘটনা, হাদিস # ১১৯/২৯৪২, আবু দাউদ, স্বহীহ্, অধ্যায় ঃ ৩২, যুদ্ধ-সংঘর্ষ, অনুচ্ছেদ ঃ ১৫, জাস্সাসাহ্’র খবর, হাদিস # ৪৩২৬, তিরমিযী, স্বহীহ, অধ্যায় ঃ ৩১, কিতাবুল ফিতনাহ্, অনুচ্ছেদ ঃ ৬৬, হাদিস # ২২৫৩ (হাদিসটি তিরমিযীর বর্ণনা)।

Wednesday, 24 April 2019

দাজ্জালের ভয়াবহতা

দাজ্জালের ভয়াবহতা


(ক) দাজ্জালের ফিতনাহ্ সবচেয়ে বড় ঃ
আবু ক্বতাদাহ্ (রা.) হতে বর্ণিত, ...আমি রসূলুল্লাহ্ (সা:) কে বলতে শুনেছি যে, আদাম (আ.) এর সৃষ্টির পর থেকে ক্বিয়ামাত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে দাজ্জালের চেয়ে মারাত্মক আর কিছু সৃষ্টি হবে না।”

-মুসলিম, অধ্যায় ঃ ৫২, বিভিন্ন ফিতনাহ্ ও কিয়ামাতের লক্ষণ সমূহ, অনুচ্ছেদ ঃ ২৫, দাজ্জাল বিষয়ে অবশিষ্ট হাদিস, হাদিস # ১২৬/২৯৪৬।

(খ) প্রত্যেক নাবী তাঁর উম্মাতদেরকে দাজ্জাল সম্পর্কে সতর্ক করেছেন ঃ

“ইবনে ওমার (রা.) বর্ণনা করেছেন যে, একদা রসূলুল্লাহ (সা:) লোকদের মাঝে দাঁড়ালেন। প্রথমে তিনি মহান আল্লাহ্ তায়ালার যথাযথ প্রশংসা করলেন। অতঃপর দাজ্জাল সম্পর্কে উল্লেখ করলেন। আর বললেন, আমি তোমাদেরকে দাজ্জাল সম্পর্কে সতর্ক করে দিচ্ছি। প্রত্যেক নাবী তাঁর সম্প্রদায়কে দাজ্জাল সম্পর্কে সতর্ক করেছেন...”

-বুখারী, অধ্যায় ঃ ৫৬, জিহাদ ও যুদ্ধকালীন আচার ব্যবহার, অনুচ্ছেদ ঃ ১৭৮, শিশুদের কাছে যেভাবে ইসলাম তুলে ধরতে হবে, হাদিস # ৩০৫৭, অধ্যায় ঃ ৬০, নাবীগণের হাদিসসমূহ, অনুচ্ছেদ ঃ ৩, মহান আল্লাহ্’র বানী, আর আমি নূহকে তার জাতির নিকট প্রেরণ করেছিলাম -সূরা হুদ (১১), ২৫, হাদিস # ৩৩৩৭, অধ্যায় ঃ ৬৪, কিতাবুল মাগাযী, অনুচ্ছেদ ঃ ৭৮, বিদায়ী হাজ্ব, হাদিস # ৪৪০২, অধ্যায় ঃ ৭৮, আচার-ব্যবহার, অনুচ্ছেদ ঃ ৯৭, কোন লোক অন্যলোককে দূর হও বলা, হাদিস # ৬১৭৫, অধ্যায় ঃ ৯২, ফিতনাহ্, অনুচ্ছেদ ঃ ২৬, দাজ্জাল সম্পর্কিত আলোচনা, হাদিস # ৭১২৭, মুসলিম, অধ্যায় ঃ ৫২, বিভিন্ন ফিতনাহ ও ক্বিয়ামাতের লক্ষণসমূহ, অনুচ্ছেদ ঃ ২০, দাজ্জালের বর্ণনা, তার পরিচয় এবং তার সাথে যা থাকবে, হাদিস # ১০১/২৯৩৩, তিরমিযী, সহীহ, অধ্যায় ঃ ৩১, কিতাবুল ফিতনাহ্, অনুচ্ছেদ ঃ ৫৬, দাজ্জালের আবির্ভাবের লক্ষণ, হাদসি # ২২৩৫, অনুচ্ছেদ ঃ ৬২, দাজ্জালকে ঈসা ইবনে মারইয়াম (আ.) হত্যা করবেন, হাদিস # ২২৪৫ (হাদিসটি তিরমিযীর বর্ণনা)।

(গ) দাজ্জালের সময়  মানুষ ভয়ে পাহাড়ে আশ্রয় গ্রহণ করবে ঃ

“উম্মু শারিক (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নাবী (সা:) কে বলতে শুনেছি যে, মানুষেরা দাজ্জালের ভয়ে পাহাড়ে পালিয়ে যাবে...”


-মুসলিম, অধ্যায় ঃ ৫২, বিভিন্ন ফিতনাহ্ ও ক্বিয়ামাতের লক্ষণ সমূহ, অনুচ্ছেদ ঃ ২৫, দাজ্জাল বিষয়ে অবশিষ্ট হাদিস # ১২৫/২৯৪৫।

(ঘ) রসূলুল্লাহ্ (সা:) সকল ঈমানদারগণকে দাজ্জালের ফিতনাহ্ থেকে আশ্রয় চাইতে বলেছেন ঃ
“আবু হুরাইরাহ্ (রা.) হতে বর্ণিত, রসূলুল্লাহ্ (সা:) বলেছেন, তোমাদের কেউ যখন স্বলাতের শেষ বৈঠকে তাশাহুদ পাঠ শেষ করবে সে যেন আল্লাহ্’র নিকট ৪টি বস্তু হতে আশ্রয় প্রার্থনা করে-
(১) জাহান্নামের আযাব হতে,
(২) ক্ববরের আযাব হতে,
(৩) জীবন ও মৃত্যুর ফিতনাহ্ হতে,

(৪) মাসীহ্ দাজ্জালের অনিষ্ট হতে।”


-মুসলিম, অধ্যায় ঃ ৫, মাসজিদ ও স্বলাতের স্থানসমূহ, অনুচ্ছেদ ঃ ২৫, স্বলাতে মধ্যে যে সকল বিষয়ে আশ্রয় প্রার্থনা করা হয়, হাদিস # ১২৮,১৩০/৫৮৮, ১৩৪/৫৯০, নাসাঈ, স্বহীহ, অধ্যায় ঃ ১৩, স্বহু, অনুচ্ছেদ ঃ ৬৪, অন্য এক প্রকার, হাদিস # ১৩০৯, আবু দাউদ, স্বহীহ, অধ্যায় ঃ ২, কিতাবুস স্বলাহ্, অনুচ্ছেদ ঃ ১৮৪, তাশাহুদের পর কি পাঠ করবে? হাদিস # ৯৮৩, ইবনু মাজাহ্, স্বহীহ, অধ্যায় ঃ ৩, আযান ও তার সুন্নাতসমূহ, অনুচ্ছেদ ঃ ২৬, স্বলাতে তাশাহুদে নাবী (সা:) থেকে বর্ণিত, যা বলতে হবে, হাদিস # ৯০৯ (হাদিসটি আবু দাউদের বর্ণনা)।


(ঙ) রসূলুল্লাহ্ (সা:) নিজেও দাজ্জালের ফিতনাহ্ থেকে আল্লাহ’র কাছে আশ্রয় চেয়েছেন ঃ


“আইশাহ্ (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ্ (সা:) কে স্বলাতের ভিতরে দাজ্জালের ফিতনাহ্ হতে আশ্রয় চাইতে শুনেছি।”


-বুখারী, অধ্যায় ঃ ১১, কিতাবুল আযান, অনুচ্ছেদ ঃ ১৪৯, সালামের পূর্বে যে দু’আ, হাদিস # ৮৩২, অধ্যায় ঃ ৪৩, ঋণগ্রহণ, ঋণ পরিশোধ নিষেধাজ্ঞা আরোপ ও দেউলিয়া ঘোষণা, অনুচ্ছেদ ঃ ১০, ঋণ থেকে আশ্রয় চাওয়া, হাদিস # ২৩৯৭. অধ্যায় ঃ ৮০, কিতাবুদ দু’আ, অনুচ্ছেদ ঃ ৪৪, বার্ধক্যের আতিসাজ্জে এবং দুনিয়ার ফিতনাহ্ আর জাহান্নামের আগুন থেকে আশ্রয় প্রার্থনা, হাদিস # ৬৩৭৫, অনুচ্ছেদ ঃ ৪৫, প্রাচূর্যের ফিতনাহ্ থেকে আশ্রয় প্রার্থনা, হাদিস ৬৩৭৬, অনুচ্ছেদ ঃ ৪৬, দারিদ্রের সংকট হতে আশ্রয় প্রার্থনা, হাদিস # ৬৩৭৭, অধ্যায় ঃ ৯২, কিতাবুল ফিতনাহ্, অনুচ্ছেদ ঃ ২৬, দাজ্জাল সম্পর্কিত আলোচনা, হাদিস # ৭১২৯, মুসলিম, অধ্যায় ঃ ৫, মাসজিদ ও স্বলাতের স্থান সমূহ, অনুচ্ছেদ ঃ ২৫, স্বলাতের মধ্যে যে সকল বিষয়ে আশ্রয় প্রার্থনা করা হয়, হাদিস # ১২৭/৫৮৭, ১২৯/৫৮৯, ১৩১/৫৮৮, অধ্যায় ঃ ৪৯, যিকর, দু’আ, তাওবাহ্ ও ক্ষমা প্রার্থনা, অনুচ্ছেদ ঃ ১৪, ফিতনাহ্ ইত্যাদি অকল্যাণ থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করা, হাদিস # ৬৭৬৪, আবু দাউদ, স্বহীহ, অধ্যায় ঃ ২, কিতাবুস্ স্বলাহ্, অনুচ্ছেদ ঃ ১৮৪, তাশাহুদের পর কি পাঠ করবে, হাদিস # ৯৮৪, অনুচ্ছেদ ঃ ৩৬৭, আশ্রয় প্রার্থনা করা, হাদিস # ১৫৪২, তিরমিযী, স্বহীহ, অধ্যায় ঃ ৪৫, কিতাবুদ দু’আ, অনুচ্ছেদ ঃ ৭১, হাদিস # ৩৪৮৫ (হাদিসটি বুখারীর বর্ণনা)।
এই হাদিসটি থেকে বুঝা যায় যে, দাজ্জাল এত ভয়ংকর যে, তার ফিতনাহ্ থেকে স্বয়ং রসূলুল্লাহ্ (সা:) ও আল্লাহ্’র কাছে আশ্রয় চেয়েছিলেন।

দাজ্জাল নিজেকে রব দাবি করবে !


দাজ্জাল  নিজেকে রব  দাবী করবেঃ


“ইবনে ওমার (রা.) বর্ণনা করেছেন যে, রসূলুল্লাহ (সা:) বলেছেন... অতঃপর সে (দাজ্জাল) তাকে (একজন নেক্কার ব্যক্তি) জিজ্ঞেস করবে, তুমি কি আমার প্রতি (রব হিসেবে) ঈমান আনবে না?...”



-সহিহ মুসলিম, অধ্যায়ঃ ৫৪, বিভিন্ন ফিতনাহ্ ও ক্বিয়ামাতের লক্ষণসমূহ, অনুচ্ছেদঃ ২১,
 দাজ্জালের পরিচিতি তার জন্য মাদিনা হারাম এবং কোন মু’মিনকে হত্যা ও জীবিতকরণ, হাদিস # ১১৩/২৯৩৮।

দাজ্জাল শব্দের অর্থ কি ?

দাজ্জাল শব্দের অর্থ :


“দাজ্জাল” (একটি আরবী শব্দ)-

(১)
  "সোনার পানি, এমন মিথ্যুক যা ছদ্ম আবরণ দ্বারা গোপনে প্রতারিত করে।"


-মু’জামুল ওয়াসীত্ব, আরবী টু আরবী লুগাত (ডিকশনারী), মিশর ছাপা প্রকাশকাল # ১৪৩১হিঃ ২০১০, পৃষ্ঠা # ২৮১।


(২)
“ভণ্ড, মিথ্যুক, প্রতারক, দুষ্ট, দুর্দান্ত।


-মু’জামুল ওয়াফী, রিয়াদ প্রকাশনী, দশম সংস্করণ, মে ২০১২, পৃষ্ঠা # ৪৬৪)।

(৩)
মিথ্যাবাদী, ধোঁকাবাজ, সোনার পানি।


-মিসবাহুল লুগাত, থানবী লাইব্রেরী, প্রথম প্রকাশ, সেপ্টেম্বর ২০০৩, পৃষ্ঠা # ২২২।


ইমাম মাহদির পরিচয়

হযরত ইমাম মাহদি (আঃ) এর পরিচিতি :
♦নাম ও বংশ :
.
উনার প্রকৃত নাম মুহাম্মদ। (আবু দাউদ, হাদিস নং ৩৬০১)। উপনাম : আবু আব্দুল্লাহ / আবুল কাশেম। উপাধি : মাহদি (আঃ)।
.
হাদিসে এসেছে, মাহদি আমার বংশে ফাতেমা’র সূত্রধরে আগমন করবে। (আবু দাউদ, হাদিস নং ৩৬০৩/৪২৮৪)।
.
হাদিসে আরো এসেছে “মাহদি আমার বংশে হবে। কোনো এক রজনীতে মহান স্রষ্টা তাঁকে ঐশ্বর্য দান করবেন ও সংশোধন করবেন।” (সুনানে ইবনে মাজাহ, বিশৃঙ্খলা অধ্যায়; হাদিস নং ৪০৮৫, সনদ সহিহ) ।
.
উম্মুল মু’মিনীন হযরত আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূল (সাঃ) বলেছেন, আশ্চর্য হচ্ছি এ ভেবে যে, আমার উম্মতের মধ্য হতে একটি দল বায়তুল্লায় আশ্রয় নেয়া এক ব্যক্তিকে আক্রমণ করতে অগ্রসর হবে। যখন তারা মরুপ্রান্তর পাড়ি দেবে তখন তাদেরকে জমিনের ভেতর ধসিয়ে দেয়া হবে।” (সহিহ বুখারি, ব্যবসা অধ্যায়, বাজার পরিচ্ছেদ এবং সহিহ মুসলিম, হা/২৮৮২ ফেতনা অধ্যায়, তিরমিযী হা/১২৭৬) ।
.
এখানে বায়তুল্লায় আশ্রয় নেয়া এক ব্যক্তি বলে ইমাম মাহদি (আঃ)-কেই বুঝানো উদ্দেশ্য। কারণ তিনি কুরাইশী এবং কেয়ামত পূর্বমুহূর্ত আল্লাহ তায়ালার সম্মানিত খলিফা।
.
♦জন্ম ও জন্মভূমি :
.
তিনি স্বাভাবিকভাবে মানুষের মতই মাতাপিতার ওরসে জন্ম লাভ করবেন। তাঁর জন্মস্থল নিয়ে মতভেদ রয়েছে। তবে কানজুল উম্মাল কিতাবের (হা/৩৯৬৭১) দুর্বল একটি রেওয়ায়েত দ্বারা বুঝায় যে, তাঁর জন্মস্থল হবে ‘মদিনা’।
.
তবে হযরত ইবনে উমর (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেন “হে কূফাবাসী তোমরা ইমাম মাহদি’র আগমনে অত্যন্ত সৌভাগ্যবান।” এতে এও বুঝা যায় যে, কূফা শহর তাঁর জন্মস্থল হতে পারে। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বাহ, হা/৩৩১২১ এবং ৩৮৭৯৮)।
কিন্তু সহিহ রেওয়ায়েত দ্বারা এটি সুস্পষ্ট নয়। তাই মতভেদ হওয়া স্বাভাবিক।
.
♦ইমাম মাহদির বৈশিষ্ট্য :
.
তাঁর শারিরীক গঠন মধ্যম আকৃতির হবে। ললাট দীপ্তিময়, উজ্জ্বল, ডাগর চক্ষুবিশিষ্ট। সম্মুখের উজ্জ্বল দাঁতগুলো ফাঁকা। ঘন দাড়ি বিশিষ্ট। সাদা ঢিলেঢালা পোশাক পরিধান করবেন ইত্যাদি। তখন তাঁর বয়স থাকবে চল্লিশ। (তাবারানী ফিল-কাবীর, হা/৭৪৯৫; এর সনদ দুর্বল হলেও ভিন্ন হাদিস দ্বারা এসব সমর্থিত) ।
.
হাদিসে আরো এসেছে “মাহদি আমার বংশধর। তিনি উজ্জ্বল ললাটের ও বাঁকা নাসিকা বিশিষ্ট হবেন। পৃথিবীকে ন্যায় নীতি ও ইনসাফ দ্বারা ভরপুর করে দেবেন। তিনি সাত বছর শাসন করবেন।” (সুনানে আবু দাউদ : হা/৪২৮৫; এর সনদ সহিহ) ।
.
♦যুগে যুগে মাহদি দাবিদার ভন্ডদের আস্ফালন :
.
বিভিন্ন হাদিসে ইমাম মাহদি (আঃ) এর অবির্ভাবের সুসংবাদ থাকায় একশ্রেণীর অসাধু লোক নিজেদের “মাহদি” দাবি করে বসে। এদের এ লংকাকান্ড প্রায় প্রত্যেক যুগেই দেখা গেছে। কখনো কখনো সাম্রাজ্যবাদী পেশিশক্তিরাও এ ভন্ডদের ভন্ডামির পেছনে মদদ যুগিয়ে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চেয়েছিল। ভারত উপমহাদেশীয় কাদিয়ানী ফেতনা এমনি একটি লজ্জাজনক ইতিহাস, যা বৃটিশ সাম্রাজ্যবাদী পেশিশক্তিকে বাদ দিয়ে কল্পনাও করা যায়না। সারা বিশ্ব আজ জেনে গেছে যে, মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী (১৮৪০-১৯০৮ ইং) কাদের আশীর্বাদপুষ্ট এবং কাদের হাতে সৃষ্টি!
.
সেইকালের “কাদিয়ানী” আর আজ “আহমদিয়া মুসলিম জামাত”। শুধু শব্দের পরিবর্তন। মতবাদ আর উদ্দেশ্য আগের মতই। এটি মুসলিম জাতিকে বিভক্ত করার জন্য আরেক যন্ত্র। যার এক দিক দিয়ে ইনপুট হয়ে আরেক দিক দিয়ে আউটপুট হলেই বৃটিশ সরকারের নেক নজর আর লন্ডনে বড় বড় চাকুরী তার জন্য অভাব হয়না।
.
এ কাদিয়ানী জামাতের প্রতিষ্ঠাতা মির্যা সাহেব সর্বপ্রথম ১৯০১ সালে নিজেকে নিজে নবী বলে দাবি তোলে ও প্রকাশ্য ঘোষণা দেয়। কিন্তু ইতিপূর্বে সে নিজেকে “মাহদি” বলেই দাবি করেছিল। ১৯০৮ সালে ভারতীয় প্রখ্যাত আলেমেদ্বীন ছানাউল্লাহ অমৃতস্বরী (রহ) এর সাথে “মুবাহালায়” লিপ্ত হবার সপ্তাহখানিক পরেই কলেরায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করে। মলমুত্রে নিমজ্জিত হয়ে তার চরম অপমানকর মৃত্যুর পরবর্তী ইতিহাস সবার জানা।
.
শীয়া মতাবলম্বী ইমামিয়া সম্প্রদায়ের মতানুসারে ২৫৪ হিজরীতে তাদের ১১ তম ইমামের ধারা শেষ হয়ে যায়। ১২ তম ধারার সাথে ইমাম মাহদি (আ)-কে সম্পর্কযুক্ত করতে চায়, যা পুরোপুরিভাবে অবান্তর ও অগ্রহণযোগ্য। আমরা তাদের এ কথিত ইমামিয়া ধারাকে ইসলাম বহির্ভূত ও মনগড়া মতবাদ মনে করি। কারণ তাদের বিশ্বাস, ইমাম মাহদি (আ) তিনি ২৫৫ হিজরীতে ১৫ ই শাবান মাসে (বর্তমানে ১৪৩৬ হিজরী) জন্মগ্রহণ করেছিলেন। শীয়াদের মতানুসারে তাঁর পিতার নাম ছিল “হাসান আছকরী”। পাঁচ বছর বয়সে তাদের কথিত সেই ১২ তম ইমাম আত্মগোপন করেন। তিনি অচিরেই কিয়ামত পূর্বমুহূর্ত আত্মপ্রকাশ করবেন—এ হল শীয়া ইমামিয়া সম্প্রদায়ের কল্পিতনির্ভর মতবাদ। আমরা তাদের এসব ভিত্তিহীন গল্পগুজব বিশ্বাস করিনা।
.
♦কে হবেন ইমাম মাহদি?
.
“মাহদি” শব্দের অর্থ পথপ্রদর্শক। কেয়ামত পূর্বমুহূর্ত তিনি মুসলিম জাতির প্রাণ রক্ষা ও সহায়তা করবেন বিধায় তাকে মাহদি উপাধি প্রদান করা হয়েছে।
.
যুগে যুগে যেসব স্বার্থান্বেষী মহল নিজে বা অন্যকে “মাহদি” বানিয়ে দাঁড় করিয়ে তামাশার পথ বেচে নিয়েছিল, তাঁরা ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে। তাই জনস্বাধারণের অবগতির জন্য বেসিক দু’চারটে কথা না বললেই নয়। মনে রাখবেন, হযরত ইমাম মাহদি (আ) তিনি কোনো নবী নন, ফেরেশতাও নন। তাঁর নামের শেষাংশে দোয়াস্বরূপ “আলাইহিস সালাম” যোগ করা হয়। যেমন হযরত খিজির, বিবি মারিয়াম, বিবি আছিয়া প্রমুখ মহামানবদের নামের শেষাংশে করা হয়। তিনি কুরাইশ বংশে হযরত ফাতেমা’র আওলাদ হতে আসবেন। হাদিসে এসেছে “আল্লাহ তায়ালা আমার বংশ হতে এক ব্যক্তিকে প্রেরণ করবেন। আমার নামেই তাঁর নাম, তাঁর পিতার নাম আমার পিতার নামেই থাকবে।”
(সহিহ আল-জামে, হা/৫০৭৩, মুসনাদে আহমদ ৩/২৬-২৭, তিরমিযী, হা/২২৩২)।
.
ইমাম মাহদি (আঃ) তিনি বায়তুল্লাহ শরিফেই আত্মপ্রকাশ করবেন। দাজ্জাল আর হযরত মসীহে ঈসা এবং প্রতিশ্রুত ইমাম হযরত মাহদি সবার সময়কাল একই হবে। প্রতিশ্রুত ইমাম হযরত মাহদি’র জীবদ্দশাতেই বিশ্বে ইসলামী স্টেট প্রতিষ্ঠা হবে, তিনি ৭/৮/৯ বছর খেলাফত করবেন অতপর স্বাভাবিকভাবে ইন্তেকাল করবেন। যারা উপরুল্লিখিত আলোচনাদি স্মরণে রাখবেন তারা আমৃত্যু ভণ্ডদের ভন্ডামি আর প্রতারণায় কিছুতেই বিভ্রান্ত হবেননা।
.
♦ইমাম মাহদি (আঃ) এর আগমন সম্পর্কে বিশ্বনবীর ভবিষৎবাণী :
ইমাম মাহদি (আ) কেয়ামত পূর্বমুহূর্ত বায়তুল্লাহ শরিফে আশ্রয় নেবেন। দুশমন বাহিনী তাঁকে হত্যা করার জন্য বায়তুল্লাহ শরিফে আক্রমণ করতে চাইবে। বিস্তারিত এই
.
১-
সহিহ মুসলিম শরিফে (হা/২৮৮৪) এবং মুসনাদে আহমদ কিতাবে (হা/২৪৭৮২) এসেছে “আশ্চর্যজনক ব্যাপার হল, আমার উম্মতের একটি দল বায়তুল্লায় আশ্রয় নেয়া এক কুরাইশীকে হত্যাকরার জন্য অগ্রসর হবে। দলটি মরুভূমিতে অবস্থানরত অবস্থায় ভূমিকম্পের সম্মুখীন হবে।” উল্লেখ্য, এখানে “কুরাইশী” বলে ইমাম মাহদি (আ)-ই উদ্দেশ্য।
.
২-
হাদিসে এসেছে “আসমান থেকে এক ব্যক্তির নামধরে ডাকা হবে। তাঁকে কোনো নিম্নশ্রেণীর মানুষ প্রত্যাখ্যান করবেনা, কোনো বিত্তশালী ও ক্ষমতাবান লোকেও অগ্রাহ্য করবেনা।”
(মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বাহ, হা/৩৭৭৫৫, হাদিসটি হাসান স্তরের হাদিস)।
৩-
হযরত ইবনে মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, সূর্যের মাঝে যখন একটি আশ্চর্যজনক চিহ্ন প্রকাশ পাবে, ইমাম মাহদি তখনি আত্মপ্রকাশ করবেন।
(মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক, হা/২০৭৭৫, ইমাম বুখারীর উস্তাদ ইমাম নাঈম ইবনে হাম্মাদ, হাদিস নং ৯৫১; হাদিসটির সনদ সহিহ) ।
এখানে ইমাম মাহদি (আঃ)-এর আত্মপ্রকাশ করার কথা সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে।
৪-
হাদিসে এসেছে, রাসূলেপাক (সাঃ) বলেছেন “শেষ যামানায় এক ব্যক্তি খলিফা হয়ে আসবেন। তিনি মানুষের মাঝে সম্পদ বণ্টন করবেন।
(সহিহ মুসলিম, ফেতনা অধ্যায়, মুসনাদে আহমদ, ৩/৮০)।
৫-
হযরত আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূল (সাঃ) বলেছেন, আশ্চর্য হচ্ছি এ ভেবে যে, আমার উম্মতের মধ্য হতে একটি দল বায়তুল্লায় আশ্রয় নেয়া এক ব্যক্তিকে আক্রমণ করতে অগ্রসর হবে। যখন তারা মরুপ্রান্তর পাড়ি দেবে তখন তাদেরকে জমিনের ভেতর ধসিয়ে দেয়া হবে।”
(সহিহ বুখারি, ব্যবসা অধ্যায়, বাজার পরিচ্ছেদ এবং সহিহ মুসলিম, হা/২৮৮২ ফেতনা অধ্যায়, তিরমিযী হা/১২৭৬) ।
এখানে বায়তুল্লায় আশ্রয় নেয়া এক ব্যক্তি বলে ইমাম মাহদি (আঃ)-কেই বুঝানো উদ্দেশ্য। কারণ তিনি কুরাইশী এবং আল্লাহ তায়ালার খলিফা।
.
৬-
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন : শেষ যামানায় আমাদের বংশ হতে তিন ব্যক্তি আগমন করবেন। ছাফফাহ, মানসূর এবং ইমাম মাহদি।
(বায়হাক্বী, দালায়েলুন নবুওয়াত ৬/৫১৪, তারিখে বাগদাদ ১/৬৩, তারিখে ইবনে কাসীর ৬/২৫১, হাকিম ৪/৫১৪)
৭-
হাদিসে এসেছে, রাসূলেপাক (সাঃ) বলেছেন : আমার উম্মতের মাঝে মাহদির আত্মপ্রকাশ হবে। তিনি সর্বনিম্ন সাত বছর আর সর্বোচ্চ নয় বছর শাসনকার্য পরিচালনা করবেন।
(সুনানে ইবনে মাজাহ, ইমাম মাহদি পরিচ্ছেদ, হা/৪০৮৩; হাদিসটির সনদ সহিহ) ।
৮-
বিশিষ্ট তাবেয়ী ও বুখারীর অন্যতম বর্ণনাকারী হযরত মুহাম্মদ ইবনে শিরীন (রহঃ) হতে বর্ণিত যে, “ইমাম মাহদি (আ) এ উম্মতের মধ্য থেকেই আসবেন। তিনি হযরত ঈসা (আঃ)-এর ইমামতি করবেন। “
(মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বাহ, হা/৩৮৮০৪)
৯-
বিশিষ্ট তাবেয়ী ও বুখারীর অন্যতম বর্ণনাকারী হযরত সাঈদ ইবনে মুছাইয়্যেব (রহঃ) বলেন, শেষ যামানায় মানুষ নানা দল-উপদলে বিভক্ত হবে। পরস্পরে মতবিরোধ ছড়িয়ে পড়বে। আসমানের দিগন্তে একটি ঝুলন্ত হাত প্রকাশ পাবে আর আসমান থেকে আহবান করবে যে, ওই ব্যক্তিই তোমাদের নেতৃত্বদানকারী মহান পুরুষ।”
(ইমাম বুখারীর উস্তাদ ইমাম নাঈম ইবনে হাম্মাদ, হাদিস নং ৯৭২; হাদিসটির সনদ সহিহ) ।
১০-
হাদিসে এসেছে “তোমাদের মধ্য হতে তিনটি দল ধনভাণ্ডার নিয়ে সংঘাতে লিপ্ত হবে। সবাই নিজেদের ইমাম মাহদি (আঃ)-এর অনুসারী হওয়ার দাবি করবে। এদের একটি দল টিকে থাকবে। … যখন তোমরা তাঁদের নেতাকে দেখতে পাবে তখন তাঁর হাতে বাইয়াত নেবে। যদিও শীতল বরফের উপর হামাগুড়ি দিয়ে যেতে হয়, তবুও। অবশ্যই এ ব্যক্তিই আল্লাহ তায়ালার খলিফা ইমাম মাহদি।”
(সুনানে ইবনে মাজাহ, হা/৪০৮৪; হাদিসটির সনদ সহিহ, তাযকিরাহ : ৫৭৫, ইমাম তাহের পাটনী)।
.
হাদিসে আরো এসেছে, রাসূলেপাক (সাঃ) বলেছেন “শেষ যামানায় এক ব্যক্তি খলিফা হয়ে আসবেন। তিনি মানুষের মাঝে সম্পদ বণ্টন করবেন।
(সহিহ মুসলিম, ফেতনা অধ্যায়, মুসনাদে আহমদ, ৩/৮০)।
আশাকরি ইমাম মাহদি (আঃ) এর আগমন নিয়ে ইসলামী জ্ঞানশূন্য একশ্রেণীর কথিত আধুনিক বন্ধুদের তাবৎ সন্দেহ ও সংশয় নিরসন হবে। যারা বুখারি এবং মুসলিম শরিফে ইমাম মাহদি (আঃ)-এর আলোচনা না থাকার দাবি তোলে থাকেন তাদের সেই অজ্ঞতাজনিত দাবিও এবার ফিরিয়ে নেবেন।
ইমাম মাহদি (আঃ)-এর আগমন বিষয়ে হাদিসগুলো তাওয়াতূর পর্যায়ে পৌঁছেছে :
যুগশ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিস ও মুফাসসির সর্বজনখ্যাত আল্লামা জালালুদ্দীন সুয়ূতী (রহঃ) ইমাম মাহদীর আগমন সংক্রান্ত হাদীসসমূহ সংকলন করে একটি আলাদা পুস্তিকাই লিখে গেছেন। যা তার الحاوي للفتاوي (হাভী লিল-ফাতাওয়া) গ্রন্থের ২য় খন্ডে রয়েছে। তাতে ২১৩-২৪৭ পৃষ্ঠা পর্যন্ত মোট ৩০ পৃষ্ঠাব্যাপী ইমাম মাহদী সংক্রান্ত হাদীসসমূহ সংকলিত হয়েছে। এরপর সুয়ূতী (রহ) লিখেছেন : আবুল হাসান মুহাম্মাদ ইবনে হুসাইন বলেন, “ইমাম মাহদীর আগমন সংক্রান্ত হাদীসসমূহ মুতাওয়াতির।”
হাফেয ইবনে হাজার (রহঃ) ফাতহুল বারীতে (৬/৫৬৯) লিখেছেন, “আবুল হাসান ‘মানাকিব আশ-শাফেয়ী’-তে লিখেছেন, ইমাম মাহদী নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উম্মত হবেন এবং ঈসা (আ) তার পিছনে নামায পড়বেন। তার আগমন সংক্রান্ত হাদীসসমূহ মুতাওয়াতির।”
সুতরাং ইমাম মাহদীকে অস্বীকার করার অর্থ, মুতাওয়াতির হাদীস দ্বারা প্রমাণিত অকাট্য বিষয়কে অস্বীকার করা। অতএব এ ধরনের চিন্তা ও বিশ্বাস থেকে বেঁচে থাকা জরুরি।
আরেকটি কথা হল, কোনো হাদিস সহিহ বা দুর্বল হওয়ার মানদণ্ড কিন্তু বুখারি মুসলিম বুঝায়না। যারা এ দুটিকে হাদিস সহিহ হবার মানদণ্ড বানিয়ে রাখেন তা তাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার। কারো মনগড়া ব্যাপার নিয়ে আমি তর্কে জিততে চাইনা। কারণ, হাদিস সহিহ অথবা দুর্বল হয় সনদের বিশুদ্ধতার উপর ভিত্তি করে।
কোনো হাদিসের সনদ তথা বর্ণনা সূত্র যদি ক্রুটিযুক্ত হয়, তখন সেটি সহিহ বুখারি বা মুসলিম শরিফে স্থান নেবার পরেও যেমন সহিহ হিসেবে আখ্যায়িত হবেনা, তেমনি কোনো বিশুদ্ধ সূত্রে বর্ণিত হাদিস যদি অন্য কোনো হাদিস গ্রন্থে পাওয়া যায়, তখন সেটিকে দুর্বল বা অনিরাপদ বলা যাবেনা। এটাই ঊসূলে হাদিস।

Tuesday, 23 April 2019

দাজ্জাল বিষয়ক বই ডাউনলোড

১) দাজ্জাল কালো পতাকার চুড়ান্ত শত্রু


লেখক - আসেম ওমর হাফিঃ


ডাউনলোড করতে ক্লিক করুন



২)বিভ্রান্তী নিরসনে ওহীর আলোকে দাজ্জাল


লেখক - মুহাম্মদ ইকবাল বিন ফখরুল




ডাউনলোড করতে ক্লিক করুন এখানে



৩) দাজ্জাল

লেখক : আল্লামা নাসির উদ্দিন আলবানী রহঃ

ডাউনলোড করতে ক্লিক করুন



৪) বারমুডা ট্রাইএঙ্গেল ও দাজ্জাল


লেখক - মাওলানা আসেম উমর

ডাউনলোড করুন



৫) মহাপ্রলয়


লেখক -ডঃ মুহাম্মদ আব্দুর রহমান আল আরেফি



ডাউনলোড করুন


৬) তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও দাজ্জাল (১ম খন্ড )
লেখক - মাওলানা আসেম ওমর হাফিজাহুল্লাহ


ডাউনলোড করুন


৭) তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও দাজ্জাল (২য় খন্ড )

লেখক - মাওলানা আসেম ওমর হাফিজাহুল্লাহ

ডাউনলোড করুন


বায়তুল আকসা ও থার্ড ট্রেম্পল

থার্ড ট্রেম্পল তৈরীর নকশা রেডি,এবং দাজ্জালকে আনার জন্য সকল ইহুদি প্রস্তুতি গ্রহন করছে,দাজ্জালের আগে ইমাম মাহদী আসবে তার জন্য মুসলিমদের কোন কথা নেই সকলে ঘুমিয়ে,কিছু নামধারী মুসলিম বলে এরা পাগল ইমাম মাহদী আসবে আর ও কত ১০০ ২০০ বছর পর আহারে নির্বোধ জাতি।
সময় ঘনিয়ে এসেছে, মুসলিম জাতি এখনো ঘুমিয়ে........
.
.
দেখতে দেখতে লাল গাভীর বয়স প্রায় ১ বছর হয়ে গেছে। ইহুদিদের দৈনিক পত্রিকা ও ম্যাগাজিন গুলি লাল গাভীর ১ বছর পূর্তি উপলক্ষে বিশেষ আর্টিকেল প্রকাশ করেছে। হাইকেল নির্মাণ ও মসিহ (দাজ্জালের) আগমনের প্রথম ধাপ হল লাল গাভীকে উৎসর্গ করা।
নেতানিয়াহুর পুনরায় ক্ষমতা গ্রহণ, মোদির ২য় বারের মত জয়লাভ পাল্ট যেতে পারে অনেক কিছু। এতে করে মুসলিমদের দুর্গতি বেড়ে যাবে,অসহায় হয়ে যাবে পুরো মুসলিম সমাজ। তবে আশার আলো হল সত্য মসিহ ইসা ইবনে মরিয়ম(আ) মিথ্যুক মসিহ দাজ্জাল কে হত্যা করবেন এবং মুসলিম জাতিকে এই অসহায়ত্ব থেকে উদ্ধার করবেন।
ইমাম মাহদী ও ইসা ইবনে মরিয়ম (আ) ইসলাম কে সোনালী যুগে ফিরিয়ে নিবেন।
ইহুদিদের বিশ্বাস—
“হাইকলের জমি আমাদের হাতে আসা মাত্রই আল্লাহ লাল গাভীকে আদেশ করবেন, সে হাম্বা ধ্বনিতে মুখর হয়ে উঠবে তারপর আমরা শুরু করবো হাইকল নির্মাণ। বনী ইসরাইলের নবীগন এই ভবিষ্যৎবাণী করে গেছেন”– যায়োনিস্ট রাবাই বাক কোক। (আখবারুশ- শারক ১৩/০৫/১৯৯৭)
.
লাল গাভী মূলত হাইকলেরই পূর্ব নিদর্শন। লালগাভী তখনই আত্মপ্রকাশ করবে, যখন হাইকল নির্মাণ নিশ্চিত হয়ে যাবে। ইয়াহুদীরা অনেক দিন যাবত হাইকল না থাকায় কোন পুজা করতে পারছে না তাই তারা দিন কে দিন নাপাক হচ্ছে, তাই এখন কোন পবিত্র ইয়াহুদী নেই ফলে কেউ এই নাপাক হাতে হাইকল বানাতেও পারবে না যদি না লাল গাভী জবাই করে রক্ত দিয়ে তারা নিজেদেরকে পবিত্র করে।
ইয়াহুদী এক পণ্ডিতের ভাষায়— “আমরা হাইকলের নির্ধারিত জায়গার সামনে পূর্বমুখী করে গাভী জ্বালাবো। এ কাজে বিভিন্ন বৃক্ষের কাঠ ব্যবহৃত হবে, তারপর ছাইকে পানি সরবরাহের মতো পাইপ লাইনের সহয়তায় প্রতিটি ইয়াহুদীর ঘরে ঘরে পোঁছে দেবো”
(এভাবেই সকল ইয়াহুদী কে পবিত্র করা হবে)
#থার্ড_টেম্পল
ঈসরাঈলের টেম্পল ইনষ্টিটিউট গত ২৮ আগষ্ট জেরুজালেমের একটি গরুর খামারে রেড-হফারের (লাল বাছুর) জম্ম হয়েছে বলে দাবি করেছে। অবশ্য সেটা আরো কিছুদিন গভীর অবজারভেশনে রাখা হবে নিশ্চিত হবার জন্য । যদি এটাই হয় সেই লাল- বাছুর, তবে এর জন্যই ঈসরাঈল জাতী ২০০০ বছর ধরে অপেক্ষা করছিল। ইহূদীদের বিশ্বাস মতে এই লাল - বাছুরই কোরবানি দেয়া হবে থার্ড টেম্পলে। এরপর এটাকে পুড়িয়ে ভষ্ম করা হবে যাতে ইহুদী জাতী পাপ থেকে মুক্ত হবে এবং ভবিষ্যত পৃথিবীর নেতৃত্ব দেবে। এই থার্ড টেম্পলে হবে তাদের মাসিহার (দাজ্জালের) হেডকোয়াটার্স ।
এই লাল-বাছুরটিকে হতে হবে ১০০% নিখুঁত। জম্ম হতে হবে জেরুজালেমে। এর আরো কিছু বৈশিষ্ট রয়েছে যার জন্যই এটা এত বিরল । তবে এটাই ইতিহাসের প্রথম রেড হফার নয়। এর আগে ৯ টি রেড-হফারের জম্ম হয়েছে এবং সবগুলুই একই নিয়মে প্রথম এবং দ্বিতীয় -টেম্পলে কোরবানি দেয়ার পর ভষ্ম করা হয়েছে।
তাদের মতে ১ম রেড হফার মুসা (আ : ) কোরাবানি দিয়েছিল আসমানি আদেশ পাওয়ার পর । ২য় রেড হফার একই প্রথায় কোরবানি দেন প্রফেট ইজরা (হযরত ঊযায়ের) জেরুজালেমে ইহুদীদের প্রথম টেম্পলে।
এর পর ২য় টেম্পলের দীর্ঘ সময়ে মোট ৭ টি রেড হফার কোরবান দেয়া হয়। ৯ম টি কোরবান দেয়া হয়েছিল তিতুসের হাতে ২য় টেম্পল ধ্বংস হওয়ার সময় ২০০০ বছর আগে। ঐ সময় জাতি হিসেবে ঈসরাঈলের পতন হয়েছিল।
১৯৪৭-৪৮ সালে ঈসরাঈল রাষ্ট্রের জম্ম হওয়ার পর থেকেই তারা থার্ড টেম্পল নির্মানের প্রস্তুতি নিতে শুরু করে এবং রেড হফারের অপেক্ষায় দিন গুনতে থাকে। কারন, ১০ম এবং শেষ রেড-হফারের কোরবানীর পরই তাদের কাংখিত মাসীহা টেম্পল মাউন্টে আসবে এবং দুনিয়াতে রাজত্ব করবে । তাই রেড হফারটি এতই গুরুত্বপূর্ণ।
কিন্তু কি এই থার্ড টেম্পল ? এটা বুঝতে হলে আল আক্বসা মসজীদের ইতিহাস জানতে হবে।
হিব্রু বাইবেল অনুসারে জেরুজালেমে প্রথম ইহুদী উপাসনালয় (টেম্পল) নির্মান করেন হযরত সুলাইমান (আ Happy ৯৫৭ খ্রিষ্টপূর্বে। এরপর যাকারিয়া (আ: ) , মুসা ( আ: ), দাউদ (আ : ), ইসহাক ( আ : ) এবং আরো অনেকে তা সংস্কার করেন। প্রায় সাড়ে চারশ বছর পর ৫৮৭ খ্রিষ্টপূর্বে Neo-Babylonian Empire এর রাজা দ্বিতীয় নেবুচাদনেজ্জার (Nebuchadnezzar II) প্রথম টেম্পল বা সুলাইমান টেম্পল ধ্বংস করে।
এরপর ৩৪৯ খ্রিষ্টপূর্বে ইজরা (Ezra ) এবং নেহেমিয়াহর (Nehemiah) নেতৃত্বে দ্বিতীয় টেম্পল নির্মিত হয় যা টিকেছিল ৪২০ বছর। ৭০ খ্রিষ্টপূর্বে রোমানরা (খ্রিষ্টানরা) দ্বিতীয় টেম্পল ধ্বংস করে । এরপর এটা খৃষ্টান আর মুসলমানদের মাঝে হাত বদল হতে থাকে । ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত জেরুজালেম কখনো ইসরাঈলের হাতে আসেনি। টেম্পল নির্মানেরতো প্রশ্নই উঠেনা। এই বছরই যুক্তরাষ্ট্র জেরুজালেমকে ঈসরাঈলের রাজধানী ঘোষণা করে থার্ড টেম্পল নির্মানের পথকে আরো প্রশস্ত করে ।
তা হলে জেরুজালেমে ইহুদীদের থার্ড টেম্পল নির্মানে আর দেরি কেন? রেড-হফার ও তৈরি! সমস্যা হচ্ছে থার্ড-টেম্পল নির্মান করতে হবে প্রথম এবং দ্বিতীয় টেম্পলের যায়গায়, যার উপর এখন দাঁড়িয়ে আছে বায়তুল মুকদ্দাস । বিষয়টা নিশ্চয় টের পেয়েছেন? আল-আক্বসা মসজীদ ভাংতে হবে! ধারণা করা হচ্ছে ইহুদীরা আল-আক্বসা মসজীদের নিচে মাটির অনেক গভীরে খুড়ে বায়তুল মুকাদ্দাসের ভিত্তি দূর্বল করে ফেলেছে। ইহুদীরা সরাসরি আক্রমণে আল-আকসা মসজীদ ভাংতে যাবেনা। বলা হচ্ছে ঐ এলাকায় কৃত্তিম ভুমিকম্প ঘটিয়ে আল-আকসা মসজীদ ধ্বসে দেয়া হবে। ঠিক কোন ফন্দি তারা আঁটছে বলা মুশকিল। তবে এ নিয়ে তারা দিন রাত কাজ করে যাচ্ছে। নির্দেশেনা অনুযায়ী "টেম্পল মাউন্ট ইনস্টিটিউট" থার্ড-টেম্পলের যাবতীয় আসবাব, তৈজস-পত্র, রাবাঈ (ইমাম) এর গাউন, এমন কি খুবই বিরল ধুপ পর্যন্ত তৈরি করে রেখেছে। টেম্পল মাউন্ট ইনস্টিটিউটের মতে নির্মান কাজ শুরু হবার ৬ মাসের মধ্যেই টেম্পল-মাউন্ট অফারিং (কোরবানীর) জন্য তৈরি হয়ে যাবে।
এরপর কি? এরপরই আসল ঘটনা শুরু। টেম্পল মাউন্ট তৈরীকে ঘিরে ঐ হাদিসে বর্ণিত মালহামা (মহাযুদ্ধ , তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ) শুরু হতে পারে মুসলমান এবং খৃষ্টানদের একাংশের (রাশিয়া?) সাথে ইহুদী এবং খৃষ্টানদের অন্য অংশের (যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপ) ।
ঈসরাঈল বাদে আশে-পাশের গোটা এলাকা অলরেডী যুদ্ধে পূড়ছে। বিশ্বের পরাশক্তিগুলু সিরিয়ায় ঘাঁটি গেড়েছে মূলত ঐ মহাযুদ্ধকে ঘিরেই। যুদ্ধের শেষ দিকেই আগমন ঘটবে ইমাম মাহদীর যাকে ইহুদীরা এবং খৃষ্টানরা মনে করবে এন্টি-ক্রাইষ্ট এবং অপেক্ষা করবে মাসীহা'র । এ সময়ই আসবে প্রকৃত দাজ্জাল , ইহুদীদের মাসীহা, যার জন্যই থার্ড টেম্পল নির্মান করে রেড হফার কোরবানি দিয়ে ওরা অপেক্ষা করছে। দাজ্জালের নেতৃত্বে ইহূদিরা সংগঠিত হবে সাথে থাকবে খৃষ্টানরাও। খৃষ্টানরা মনে করবে দাজ্জালই হযরত ঈসা ( আ : ) । কিন্তু দাজ্জালের পরপরই হযরত ঈসা ( আ: ) আগমনের পর অনেক খৃষ্টান প্রকৃত দাজ্জালকে চিনতে পারবে এবং হযরত ঈসা ( আ: ) এর বাইয়্যাৎ গ্রহণ করবে।
এবার আবার একটু লাল-বাছুরটি কথা ভাবুনতো! আসলেই যদি এটা সেই রেড-হফার হয় তবে কত সময় বাকি? একটা গরুই বা কত বাছর বাঁচে। তা ছাড়া লাল-বাছূরের কোরাবানী দিতে হবে, বুড়ো গরু নয়। ষ্টেজে সবকিছুই প্রস্তুত। অপেক্ষা শুধু ট্রিগার টানার। আল-আক্‌সা মসজীদ ভাঙ্গা বা থার্ড টেম্পল নির্মানের সাথে-সাথেই ডোমিনো ইফেক্টের মত খুব দ্রুতই সবকইছু ঘটতে থাকবে।
-সংগৃহীত

দাজ্জালের ফিতনা ও ঈমানের হেফাজত

অন্ধকার ফিতনার ভয়ানক প্রতিচ্ছবি দিন দিন মানবতাকে গ্রাস করে চলেছে। ঈমানওয়ালাদের জন্য এটি কঠিন পরীক্ষার মুহূর্ত। কুফরের পক্ষ থেকে এদিক বা ওদিক...